নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত রবিবার রাত থেকে ভারী বর্ষণে ডুবে গেছে জেলার ২০ শতাংশ আমন ধান। বিশেষ করে কেটে রাখা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার প্রান্তিক কৃষকরা জানিয়েছেন সরিষা, আলু, পেঁয়াজ রসুনসহ বিভিন্ন শীত কালীন সবজির ক্ষেতে পানি উঠে যাওয়ায় আগামী দুই এক দিনের মধ্যে পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
বৃষ্টি অব্যহত থানায় টানা বৃষ্টিতে উপক‚লের সব ধরণের কৃষি জমিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সাতক্ষীরার কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া না গেলেও শ্যামনগরের পদ্মপুকু, খুটিকাটা, গাবুরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, আনুলিয়া, শ্রীউলা এলাকায় বেড়িবাঁধের কয়েকটি স্থানে বিরামহীন বৃষ্টির পানিতে মাটি সরে গেছে। দ্রæত পদক্ষেপ না নিলে যে কোনো মুহূর্তে জোয়ারের পানির ¯্রােতে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাাবিত হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে দুর্বল বাঁধের কয়েকটি স্থান মেরামতের চেষ্টা করছেন।
কলারোয়া উপজেলার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের এরশাদ আলী ধাবক (৫৬) জানান, তার ৫ বিঘা জমির আমন ধান কেটে রাখার পর বৃষ্টি কারণে বাড়িতে তুলতে পারেননি। গত দুই দিনের বর্ষায় কেটে রাখা ধানের উপর পানির ¯্রােত বইছে। তার মতো এলাকার সকল আমন চাষির ধান ক্ষেত পানিতে তরিয়ে গেছে।
একই এলাকার মোজাম্মেল ঢালী জানান, পানিতে সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ক্ষেতে পানি উঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে মাটির তলের আলু পচে যাবে। হঠাৎ বৃষ্টিতে এলাকার সব মানুষের কম বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
তালা উপজেলার ধানদিয়া গ্রামের আবু বক্কর জানান, তার এক বিঘা জমির পালং শাক, ১০ কাঠা জমির ওল কপি সম্পর্ণ পানির নিচে। পানি সরানোর পথও নেই। আকস্মিক বৃষ্টিপাতে তার মতো এলাকার শীত কালীন অনেক সবজি চাষির মাথায় হাত উঠে গেছে।
বিভিন্ন ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই দিনের একটানা বৃষ্টিতে দেবহাটা, আশাশুনি, কালিগঞ্জ, সাতক্ষীরা সদর, কলারোয়া, তালা ও শ্যামনগর এলাকায় শীতকালীন ও রবি শস্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে আবহাওয়া ভালো হলেও উৎপাদন আশানুরুপ হবে না। আর সম্পূর্ণ ক্ষতি হওয়া ফসলের ক্ষেতে নতুন করে চলতি মৌসুমে জমি তৈরী করে বীজ বপন করাও যাবে না।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুুরুল ইসলাম বলেন, এখন আমন মৌসুম চলছে। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ধানসহ শীত কালীন সবজি ক্ষেত ও রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় ৭২ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। বাদ বাকি পাকা ধান মাঠে আছে। বৃষ্টিতে কৃষিতে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নিরপন করতে আরও দুই এক দিন সময় লাগবে। উপ-সহকারীদের ক্ষয় ক্ষতির তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।