আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনির আনুলিয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ কাকবাসিয়া বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জবর দখলকৃত জমি দীর্ঘ ১৩ বছরেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। উপরন্তু বিদ্যালয়ের গেটের মুখে জোর পূর্বক গড়ে তোলা দোকানপাট থেকেও দখলকারীদের উচ্ছেদ না করায় শিক্ষার্থীদের যাওয়া আসা ও ক্লাস পরিচালনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশসক, ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগ, স্কুল পরিচালনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পারভীন সুলতানা জানান, বিদ্যালয়টি সুদীর্ঘকাল সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ বিদ্যালয় হতে অসংখ্য শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও দেশ বিদেশে কর্মরত আছেন। বিদ্যালয়টির পরিবেশ সৃষ্টি ও আর্থিক সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের নামে দানকৃত জমি বিদ্যালয়ের নামে রেকর্ডও হয়েছে। জমির করাদিও বিদ্যালয় পরিশোধ করে আসছে।
প্রতিষ্ঠানের জমির মধ্যে কাকাবাসিয়া মৌজায় এসএ ৪৫, ৪৬ ও ৪৮ নং খতিয়ানে, ৩১০, ১৮৬, ৫৬৭ ও ৫৬৮ দাগে এবং আরএস ৪ নং খতিয়ানে ৩৩০, ৭২১ ও ৭৫৮ দাগে ৪২ শতক জমি যেখানে পুকুর ও ধানচাষ করা হতো। কিন্তু কাকবাসিয়া গ্রামের মৃত কেরামত আলী গাজীর ছেলে হাবিবুল্লাহ, মহিবুল্লাহ, শরিফুল, আরিফুল, মাসুম বিল্লাহ, অলিউর ও সাইফুল্লাহ গাজীসহ অন্যরা ধানচাষযোগ্য জমির মাটি কেটে পুকুর ও খননকৃত জমি জবর দখল করে নেয়। দীর্ঘ ১৩ বছরে তারা স্কুলকে কোন হারির টাকাও দেয়নি।
এমনকি পেশি শক্তির জোরে স্কুলে ঢোকার গেটের মুখে যাতায়াতের জন্য স্বল্প জায়গা ফাকা রেখে দু’পাশে দোকান ঘর উঠিয়ে দখল করা হয়েছে। দোকানে মানুষের সমাগম থাকায় ও সংকীর্ণ পথে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা সাইকেল, মটর সাইকেল কিংবা পায়ে হেটে যাতয়াতে প্রতিবন্ধকতার কারণে নাজেহাল ও দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে। এছাড়া দোকানে উচ্চ শব্দে টিভি চালান ও জোরে কথা বলায় স্কুলের ক্লাস পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা ঘটে থাকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় স্কুল এরিয়ার ২০০ গজের মধ্যে স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান থাকবে না বলে এক পরিপত্রে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্কুলের সীমানার মধ্যে ও একেবারেই পাশে দোকান পাট স্থাপন ও স্কুল চলাকালীন সময়ে কাঁচাবাজার বসানোয় স্কুলের স্বাভাবিক পরিচালনা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। হারির টাকা পেতে ইতপূর্বে ২০২০ সালে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করা হলেও আদায় হয়নি। বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমি উদ্ধার ও হারির টাকা পেতে আবেদন করা হয়েছে।