আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনির বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা গ্রামে জুম্মার নামাজ শেষে আদায়কৃত টাকা নিতে বাধা দেওয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় মুসল্লি শাহাজুদ্দিন আহত হয়েছেন। পুলিশী হস্তক্ষেপে আহত মুসল্লিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর দু’টার দিকে মাধ্যম বেউলা বায়তুল মামুর জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। মসজিদের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম, মুসল্লি মহিদুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, ফরিদ আহমেদ, ওলিউর রহমান, আঃ হাই, আঃ হামিদ, বিল্লাল হোসেনসহ অনেকে জানান, মসজিদটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত। ২০১২ সালে মসজিদের মুসল্লিদের সম্মতিক্রমে রবিউল ইসলামকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়। নতুন কমিটি পুরনো কমিটির কাছে খাতাপত্র ও হিসাবনিকাশ চাইলে দেওয়া হয়নি।
কিন্তু তারা জানতে পারেন মসজিদের জমি জনৈক হিন্দু সম্প্রদারের ব্যক্তির নামে রয়েগেছে। তখন মুসল্লিরা স্বউদ্যোগে টাকা উত্তোলন করে ১ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা দিয়ে মসজিদের নামে জমি ক্রয় করে নেন। এবং সেখানে নতুন করে মসজিদের বিল্ডিং নির্মান কাজ শুরু করা হয় এবং ছাদ ঢালাই পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দু’ বছর আগে স্থানীয় ঢাকায় বসবাসকারী ড. মেহদী হাসান ও কয়েকজন গোপনে মুসল্লিদের অজ্ঞাতে মসজিদটি ওয়াকফ এস্টেট হিসাবে তালিকাভুক্ত করিয়ে মসজিদ তারা কয়েকজনে নিজেদের ইচ্ছামত চালাবেন বলে ঘোষণা দিলে মুসল্লিদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তখন তারা কয়েকজন ব্যতীত সকল মুসল্লি কমিটি ছাড়াই নিজেরা সম্মিলিত ভাবে মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে মসজিদ পরিচালনা করে আসছেন। মসজিদের আয়ব্যয় ইমাম সাহেবের নেতৃত্বে করা হয়ে থাকে। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) জুম্মার নামাজের পূর্বে মসজিদের ইমাম আঃ হান্নানকে নামাজ না পড়াতে বলেন মেহদী হাসান। তখন মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে মেহদী ঐ ইমামকে নামাজ পড়াতে বললে শান্তিপূর্ণ ভাবে নামাজ শেষ হয়।
নামাজ শেষে অধিকাংশ মুসল্লি চলে গেলে হঠাৎ মৃত নেছার আলীর ছেলে হান্নান দান বাক্সে কতটাকা হয়েছে, জানতে চাইলে ইমাম টাকার পরিমান বলার পর হান্নান দানবাক্স নিজের আয়ত্বে নিতে চায়। মুসল্লি শাহাজুদ্দিন বাধা দিলে আঃ হান্নান, মেহদী হাসান, মোকাররম শেখ প্রমুখ আক্রমন করলে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। মুসল্লিরা জানান, আহত শাহাজদ্দিনকে রক্ষার জন্য বাইরে আনা হলে প্রতিপক্ষ মসজিদের মধ্যে ঢুকে নিজেরাই তালা আটকে দিয়ে বসে পড়ে।
খবর পেয়ে বুধহাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মামুন হোসেন ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আহত মুসল্লিকে সাতক্ষীরা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হওয়ার পর পুলিশী হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সহকারী পুলিশ সুপার (দেবহাটা সার্কেল) ঘটনাস্থান পরিদর্শন শেষে বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের সাথে কথাবার্তা চলছে।