নভেম্বর ২০, ২০২১
আশাশুনির হলদিপোতা টু দরগাহপুর সড়কের প্রায় ৩ কি.মি. চরম ঝুঁকিপূর্ণ
সমীর রায়, আশাশুনি : আশাশুনির হলদিপোতা টু দরগাহপুর সড়কের প্রায় ৩ কি.মি. এলাকা চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েকটি জায়গায় সড়কের কার্পেটিংয়ের পিচ ও পাথর উঠে বালি বেরিয়ে বড়বড় খানাখন্দে পরিনত হওয়ায় ছোট ছোট দুর্ঘটনা লেগেই আছে এ এলাকায়। সড়কের দু’ধারে মৎস্য ঘের। ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কের কয়েকটি জায়গার দু’ধারের মাটি ধ্বসে ঘেরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। দ্রæত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে যাত্রীবাহী বাস বা মালবাহী ট্রাক জান-মালসহ উল্টে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উপজেলার দরগাহপুর, কুল্যা ও পাশ্ববর্তী কাদাকাটি ইউনিয়নের লোকজনের জন্য সড়কটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া খুলনার পাইকগাছা, কয়রা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মানুষও চলাচল করায় সড়কটি খুবই ব্যস্ত সড়কে পরিনত হয়েছে। এ সড়কে আধাঘণ্টা অন্তর সাতক্ষীরা ভায়া কুল্যা হয়ে দরগাহপুর পর্যন্ত যাত্রীবাহি বাস চলাচল করে। এছাড়া সারাদিন ধরে শতশত ইজিবাইক, ইঞ্জিনভ্যান ছাড়াও মালবাহী ট্রাক যাতয়াত করে খুলনা-সাতক্ষীরার মালামাল আনা-নেওয়া করা হয়। কিন্তু হলদিপোতা কার্লভাট থেকে শুরু করে মন্টু সাহেবের মৎস্যঘের সংলগ্ন ঢেপুর কার্লভাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কি.মি. সড়ক খুবই জ্বরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে কুল্যা গ্রামের জনৈক মোস্তফার মৎস্যঘের, ঢেপুর কার্লভাটসহ কমপক্ষে ৫টি স্থানে রাস্তার কার্পেটংয়ের পিচ ও পাথর উঠে বেজ’র বালি উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুই ও তিন চাকার যানবাহন গুলির চাকা বালিতে বসে যেয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ তিন কি.মি. সড়কের দু’ধারে শুধুই মৎস্যঘের কোন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। মৎস্যঘেরের কর্মচারীরা ছাড়া দিনের বেলা কাউকে বড় একটা দেখা যায়না তাই ছোটখাটো দুর্ঘটনার কথা প্রায় অগোচরেই থেকে যায়। এ সড়ক দিয়ে প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা, বড়দল ও কাদাকাটি ইউনিয়নের চিংড়িমাছ খুলনা বা চট্টগ্রামে যেয়ে থাকে। অন্যদিকে খুলনা থেকে পাইকগাছা হয়ে এসব এলাকায় বিভিন্ন বাজারে নানারকম মালামাল সরবরাহ করা যায় খুব সহজে তাই অবিলম্বে রাস্তাটি মেরামত করা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক এমএম নুর আলম। এছাড়া কাদাকাটি ইউনিয়নের যদুয়ারডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন স্থানীয় হিরন্ময় ডাক্তারের বাড়ীর সামনে থেকে কার্পেটিংয়ের রাস্তা পূর্বদিকে খালে ও পশ্চিম দিকে পুকুরে যাওয়ার অতিক্রম হয়েছে। রাস্তাটির পিচ ও পাথর উঠে সেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রীদের এখান থেকে নেমে ভাঙাটি পার হয়ে আবার গাড়ীতে উঠতে হয়। এসব জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। বিষেজ্ঞরা মনে করেন, উপজেলার বেশিরভাগ সড়কের দু’ধারে মৎস্যঘের। ঘেরমালিকরা ঘেরের ৩ ধারে বেড়িবাঁধ দিলেও রাস্তার পাশ দিয়ে কেউ আলাদা বাঁধ দেয়না। মুল সড়কটিকেই তারা নিজেদের ঘেরের ৪ নং বাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই সারাবছরই এসব সড়কের দু’পাশে পানির ঢেউ লাগে। এতে দু’পাশের মাটি নরম হয়ে ধুয়ে যেতে থাকে ফলে সড়কের ভীত নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বৃষ্টির সময় ভারী ট্রাক মালামাল নিয়ে চলাচল করলে সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নির্মানের খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়। উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রতিবছরই মাইকিং করে প্রত্যেকের মৎস্যঘের সংলগ্ন সড়কে মাটি দেওয়ার কথা বলা হলেও ৯০ ভাগ মৎস্যঘের মালিকরা রাস্তায় মাটি দেয় না। উপরন্তু রাস্তার দু’ধারে সরকারিভাবে লাগানো বাবলা গাছের ডালগুলি ইচ্ছেমত কেঁটে ঘেরে ‘মাছের কোমর’ (স্থানীয় ভাষা) দিয়ে রাখে। গাছের ডাল কাটতে কাটতে হলদিপোতা টু দরগাহপুর সড়কে বাবলা গাছ আর নেই বললে চলে। এছাড়া অনেকেই রাস্তার ধারে বসতবাড়ি না করে পুকুর কেটে ভেতরে বাড়ি করে থাকেন। কিন্তু একবার পুকুর কাটার পর রাস্তার ধারে আর কোনদিন মাটি দিয়ে বা পাইলিং করে বাঁধেন না। ফলে প্রায় সমস্ত জায়গায় পুকুর সংলগ্ন সড়কগুলি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিষয়গুলি আমলে নিয়ে সড়কটি মেরামতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
8,395,450 total views, 4,519 views today |
|
|
|