Site icon suprovatsatkhira.com

কৃষি কাজ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় প্রতিবন্ধী পরিবার

নুরুল ইসলাম, খাজরা (আশাশুনি) প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের মুরারীকাটি গ্রামের একটি প্রতিবন্ধী পরিবার অন্য আট দশ জনের মত কৃষি কাজ করে সংসারে আর্থিক অভাব অনটন দূর করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চেয়েছেন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। কৃষিতে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চায় এ প্রতিবন্ধী পরিবারটি।

বুধবার(১০ নভেম্বর) সকালে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বড়দল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মুরারীকাটি গ্রামের বিমল কৃষ্ণ মন্ডলে পুত্র স্বপন কুমার মন্ডলের (৩৫) ঘেরের আইলে আগাম জাতের তরমুজ,মিষ্টি কুমড়াসহ শীতকালীন সবজির ক্ষেত পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায়, স্বপন মন্ডল,স্ত্রী,ও একমাত্র পুত্র মৃনাল মন্ডল(১৫) তিন জনই শারিরিক প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্তে¡ও এ পরিবারটি ৩বিঘার মত জমি বর্গা নিয়ে তরমুজসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছেন। এখন শেষ পর্যায়ে মাচায় ঝুলছে আগাম জাতের লাল তরমুজ। মিষ্টি কুমড়া গাছে ফল এসে গেছে। কিছু দিন আগে নিজে উৎপাদিত তরমুজ সাতক্ষীরা শহরে ৩৮টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। স্বপন মন্ডলের তরমুজ চাষ করতে বিঘা প্রতি বীজ,মাচা তৈরি,জমির হারি,কীটনাশক পরিচর্চা বাবদ ২০হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। ফলনও হয়েছিল ভাল। কিন্তু টানা অতিবৃষ্টিতে পরপর দুই বার মাচা ভেঙে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হবে বলে জানা যায়।
কৃষক স্বপন মন্ডল জানান, বাবা,স্ত্রী, ছেলে নিয়ে সংসার ঠিকমত সংসার চালাতে পারি না। প্রতিবন্ধী হওয়ায় ঝুকিপুর্ন কাজ করতে পারি না। তাই পরের জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করছি।
তিনি আরও জানান,খাজরা ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমার একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড ছিল। কিন্তু সময় মত অনলাইনে এমআইএস করতে না পেরে আমার কার্ডটি বাতিল হয়ে যায়। আমি ভাতা পায় না। আমার ছেলেও মৃদু মানসিক ভারসাম্যহীন। সমাজ সেবা অফিস হতে নাগরিক সুবর্ন কার্ড আছে। আমি ও আমার সন্তানের ভাতার কার্ড খুব প্রয়োজন। তাছাড়া সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা পেলে আমরা কৃষি কাজ করতে পারব। এবছর তরমুজ চাষ করতে গিয়ে ঋণে পড়ে গেছি। বর্ষা আর লকডাউনের কারনে তরমুজ বাহিরে বিক্রি করতে পারিনি। ফলে কম দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে হয়েছে।

কার্ডের বিষয়ে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম জানান,অনলাইনে এন্ট্রি করতে না পারায় তার কার্ডটি বাতিল হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আবার স্বপন মন্ডলের নামে তালিকা সমাজ সেবা অফিসে পাঠিয়েছি। আশা করি সে আবারও প্রতিবন্ধী ভাতা পাবে।
স্বপন মন্ডল একজন সফল প্রতিবন্ধী কৃষক। এছাড়া তিনি একজন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকারী। তাকে সরকারের সহযোগিতা করা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা। স্বপন মন্ডলের পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড ও কৃষি কাজে সরকারি সহযোগিতা এখন বড্ড প্রয়োজন। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারি অনুদান পাওয়ার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন এ প্রতিবন্ধী পরিবার।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version