কালিগঞ্জের আব্দুল্ল্যাহ আল হাসান, বাপ্পী সরকার, আবু বক্কার সিদ্দিক, শেখ আলাউদ্দিন, হাবিবুল্ল্যাহ বাহার, রোকনুজ্জামানসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ থেকে অক্সিজেন নিয়ে আমরা বেঁচে আছি। তবে চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে ছোট বড় গাছ গুলো। গাছের গায়ে পেরেক ঢুকিয়ে লাগানো হচ্ছে বড় বড় সাইনবোর্ড। এতে সড়কের গাছ গুলো রয়েছে চরম ঝুঁকির মধ্যে। গাছ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে কিন্তু কিছু মানুষ সেই গাছের সাথে চরম নিষ্ঠুরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
জলবায়ু যোদ্ধা বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক জান্নাতুল মাওয়া বলেন, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু প্রমাণ করেছিলেন জীবদেহের মত গাছেরও প্রাণ রয়েছে। তিনিই লক্ষ্য করেছিলেন উদ্ভিদ ও প্রাণী জীবনের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। মানুষের মত গাছেরও আবেগ, সুখ- দুঃখের অনুভূতি রয়েছে। গাছ ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত বাঁচতে পারবো না। তবে অতি দুঃখের বিষয় সেই গাছের সাথেও আমরা চরম নিষ্ঠুরতা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের বিবেককে জাগ্রত করা উচিত।
কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক শ্যামাপদ দাস বলেন, বিজ্ঞাপনের চাপে সারা দেশে বিপন্ন হচ্ছে গাছের অস্তিত্ব। সারা দেশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের রাস্তার পাশে বিশালাকার শিরিষ, বট ও অশ্বত্থ গাছগুলোর গায়ে প্রচারণা গুলো গাছের গায়ে এমনভাবে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে যেন সহজে তা খোলা না যায়। ব্যবহার করা হচ্ছে পেরেক ও তারকাঁটার মত সামগ্রী।
লোহাজাতীয় উপাদান ব্যবহারে গাছের গায়ে পঁচন ধরে, ব্যাহত হয় গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি। সিটি করপোরেশন আইন, ১৯৯০ এর ৯২ ধারার ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী গাছে সাইনবোর্ড লাগানো দন্ডনীয় অপরাধ; রয়েছে ৫০০০/- পর্যন্ত জরিমানার বিধান। অথচ এই আইনের ব্যবহার দেশে খুবই সীমিত।
এমনিই দেশে বনভূমির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে, এরই মধ্যে এসকল ব্যানার ও পেরেক অপসারণ না করলে হয়ত মুক্ত বাতাসে বিশুদ্ধ অক্সিজেনের অভাবে প্রাণটাই হারাতে হবে।
কালিগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার (বিসিএস, কৃষি) মোহাম্মদ শফিক আল সারাহ বলেন, রেইনট্রি বা এ জাতীয় গাছে মেরেক মারার ফলে প্রথমে আঠা ঝরে। এরপর ওই গাছে ছত্রাকসহ পোকার আক্রমণ হয়। বেশি মেরেক মারার ফলে কাঠের গুণগত মান নষ্ট হওয়াসহ গাছ মারাও যেতে পারে। এছাড়া লোহার তার শক্ত করে যেখানে বাঁধা হয় সেখানে গাছ চিকন হয়ে যায়। যার ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওই গাছ গুলো ভেঙে যায়। আর নারিকেল গাছে গন্ডার পোকার আক্রমণ হয়।
এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কের পাশে গাছের সাথে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুন গুলো অতিদ্রুত অপসারণের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা নিয়েছি।