নিজস্ব প্রতিনিধি: শ্যামনগর উপজেলায় সুদ ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মহজনী সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম অর্থ মন্ত্রনালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। লিখিত আবেদনে তিনি বলেন , তিনি মেসার্স রোজা ব্রিকস, বংশীপুর, শ্যামনগর, সাতক্ষীরার তিনি মালিক । তার এই ইটের ভাটা থেকে ইট বিক্রয়ের জন্য এলাকার যাদবপুর গ্রামের মৃত তইম সরদারের পুত্র কুদ্দুস সরদার, ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত মোহম্মদ আলীর পুত্র মিজানুর রহমানসহ বহু মানুষের নিকট থেকে অগ্রীম টাকা গ্রহন করে টাকার সিকিউরিটি হিসাবে চেক প্রদান করেন।
এদের মধ্যে কয়েকজন ইট নিয়ে চেক ফেরত প্রদান করেন । কিন্ত যাদবপুর গ্রামের মৃত তইম সরদারের পুত্র কুদ্দুস সরদার, ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত মোহম্মদ আলীর পুত্র মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন ইটের কোয়ালিটি খারাপ ইত্যাদী অজুহাতে ইট না নিয়ে সুদে আসলে দ্বীগুন হারে টাকা ফেরত চায়। সুদের টাকা না দেওয়ায় এসব সুদ কারবারীরা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দায়ের করে সুদের টাকা আদায় করা চেষ্টা করছেন। মহজনী সুদের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুদ কারবারীরা তৎপরতায় এলাকায় সুদের কারবারের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। এলাকার দায়গ্রস্ত মানুষেরা তাৎক্ষনিক টাকার প্রয়োজনে আগের মত অর্থশালীদের নিকট থেকে সহয়তা মূলক ঋন পাইনা। বিপদে পড়ে এসব দায়গ্রস্ত মানুষদের অবৈধ মহজনী সুদকারবারীদের দারস্ত হতে হয়।
তখন এসব অবৈধ মহজনী সুদকারবারীরা দিন প্রতি হাজারে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত আবার মাসিক প্রতি হাজারে ২/৩শ টাকা হারে সুদ আদায় করে থাকে। এসব সুদের টাকা আদায়ের জন্য দায়গ্রস্ত মানুষদের নিকট থেকে টাকার অংক না বসিয়ে চেকে স্বাক্ষর করে চেক জমা রাখা হয়। সময় মত টাকা পরিশোধ না করতে পারলে ঐ চেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বসিয়ে চেক ডিজ অনার করে মামলা দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। এসব মহজনী সুদ কারবারীরা নিজে অথবা তাদের আত্মিয় স্বজনদের দিয়ে মামলা করিয়ে দায়গ্রস্তদের পথে বসায়। আদালতে এক জন সুদ কারবারী নিজে এবং তার প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রতি বছর সুদের টকা আদায়ের জন্য কয়েকটি করে মামলা দায়ের করে থাকেন। প্রতিটি মামলায় একই কাহিনী ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লেখা হয়। টাকা ধার নিয়ে সময় মত ফেরত দেয়নি বলে গল্প বানানো হয়। আর এন আই এ্যাক্টের মামলায় তদন্ত হয় না সুধু মাত্র চেক ডিজ অনার হলে বাদীর পক্ষেই বেশিরভাগ মামলা রায় হয় ।
যার কারণে অবৈধ মহজনী সুদের টাকা আদায় করা খুব সহজ হয়ে গেছে। এলাকার সুধী মহল অবৈধ মহজনী সুদ কারবারিদের হাত থেকে বাচতে এন আই এ্যক্ট সংশোধন করে তদন্ত করার বিধান রাখার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন। অপরদিকে অবৈধ সুদ কারবারের কারণে সরকার ও বৈধ আর্থিক প্রতিষ্টান গুলো ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হাইকোট অবৈধ সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তালিকা প্রস্তুত মামলা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন। এসব অবৈধ সুদ কারবারীরা কয়েক বছর সুদের কারবার করে এবং এন আই এ্যাক্টের মামলায় তদন্তের বিধান না থাকার সুবাদে মামলা করে সুদের টাকা আদায় করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছে। সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করলে এসব সুদ কারবারিদের জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পত্তির তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে এলাকার সুধী মহল মনে করেন।