জি এম মাছুম বিল্লাহ: পানি উন্নয়ন বোর্ডের(পাউবো) কাছে জিম্মি উপক‚লের মানুষের জীবন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে প্রায়ই। উপকূলীয় এলাকার মানুষ ঝড়-ঝঞ্ঝা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে খাপ খাইয়ে নিলেও জরাজীর্ণ ওয়াপদা বেড়ীবাঁধের কারণে এখন নিরাশ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি কয়েক বছর দেখা গেছে প্রায় প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে। ২০০৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৫বছরে মোট ১০টি সাইক্লোন হয়েছে যার মধ্যে সিডর, আইলা আম্পান ও যশ উপকূলীয় এলাকা গুলোকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে। প্রাণহানি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের।
মানুষের পাশাপাশি মারা গেছে অনেক গবাদি পশুও। মৎস্য ঘের ও কাঁকড়া প্রকল্পগুলোতে ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রমের কোন অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি। গতানুগতিক নিয়মে চলছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০২০ সালের ২০মে সুপার সাইক্লোন আম্ফানের হিংস্র থাবায় লন্ডভন্ড হয়ে যায় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জায়গা যার মধ্যে সাতক্ষীরার উপকূলে ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশি। সাতক্ষীরার জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়লিনী, গাবুরা, কৈখালী, রমজান নগর, কাশিমাড়ী ও পদ্মপুকুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়ীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়।
জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, কুড়িকাহনিয়া,গড় কোমরপুর, শুভদ্দরটিসহ বিভিন্ন এলাকার বেড়ীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়।
প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ধ্বংসলীলা শেষ হওয়ার পরও দীর্ঘদিনে সরকারিভাবে শুরু হওয়া সব বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। যেগুলো শেষ হয়েছে সেখানেও চরম দুর্নীতি লক্ষ্য করা গেছে। প্রতাপনগরের হরিশখালির মনির বলেন, যে ভাবে বাঁধ নির্মাণ হয়েছে তাতে আগামী গনেই আবার চুপানি খেতে হবে।
আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই পরবর্তী বছর ২০২১সালের ২৫মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াশ আবার প্লাবিত দক্ষিণ অঞ্চল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নড়বড়ে নাজুক মেয়াদ উত্তীর্ণ বেডড়ীবাঁধকেই দুষছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময় আশ্বস্ত করেছেন তাদের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে বেড়িবাঁধ গুলোর অবস্থা ভালো সমস্যা নেই। এ সমস্ত এলাকার নাজুক বেড়িবাঁধের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের লিংক পিরিয়ড এই সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কাজ হয়না। তিনি সরাসরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অপরিকল্পিত পরিকল্পনাকে দুষলেন। সর্বোপরি উপকূলীয় অঞ্চলের সাধারণ মানুষ তাদের ভাগ্যকে সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে ছেড়ে দিয়েছেন।