আশাশুনি প্রতিনিধি: মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার দখল করে স্কুলকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওযার প্রতিবাদ ও প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে দানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে চাম্পাফুল আ. প্র. চ মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের সমানের সড়কে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
শান্তিপূর্ণ ভাবে মানববন্ধনের কার্যক্রম শুরু করলে পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌছে মাইক খুলে নিয়ে মানববন্ধন বন্দ করে দেয়। প্রতিবাদী এলাকাবাসী পরে মাইক ছাড়াই মানববন্ধন করেন।
মানবন্ধন চলাকালে বক্তাগণ বলেন, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ সীমান্তে অবস্থিত কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল আ. প্র. চ মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ একটি সুপরিচিত শিক্ষা প্রতষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক পদে অবৈধ ভাবে আঃ হাকিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে স্বচেতন এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষকদের একটি অংশ অনিয়ম প্রতিরোধে স্বোচ্চার ভাবে প্রতিরোধে মাঠে নামেন। কিন্তু নানা ষড়যন্ত্র ও পেশী শক্তির কাছে তাদের দাবী আদায় না হওয়ায় বিষয়টি আদালতে গড়ায়।
গত ২২ জুন মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ সিভিল রিভিশান মামলা ১১৬৪/২১এর আদেশে প্রধান শিক্ষক আদুল হাকিমের উপর রুল জারি করেন এবং তার বিদ্যালয়ের সকল দাপ্তরিক কাজের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এমনকি তার বেতনভাতা বিলে স্বাক্ষরের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ প্রকাশিত হওয়ার পর তৎকালীন এডহক কমিটির সভাপতি (নীলকন্ঠ সোম) বরাবর আদেশের কপি প্রেরণ করা হলেও তিনি কোন প্রকার কর্ণপাত করেননি। এমনকি হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার গত ১ আগষ্ট জেশিঅ/সাত/২০২১/৭৮৫ স্মারকে এবং কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার ৮ আগষ্ট উমাশি/কালি/সাত/২০২১/৩৩৪ স্মারকে আদেশ প্রদান করলেও এডহক কমিটির সভাপতি (নীলকন্ঠ সোম), আদুল হাকিম ও অফিস সহকারী ইয়াছিন আলী বিদ্যুত কোন কিছুকে তুয়াক্কা না করে পেশি শক্তিতে অবৈধভাবে চেয়ার দখল করেন। এবং নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যাপীঠের গচ্ছিত অর্থ, দোকানভাড়া, পুকুর, বাগান লীজ, সেশনচার্জ ও বেতনের লক্ষ লক্ষ টাকা এবং ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপে বোর্ড নির্ধারিত অর্থ রশিদের মাধ্যমে নেওয়া হলেও অতিরিক্ত অর্থ বিনা রশিদে আদায় করে আত্মসাৎ করেছেন।
বক্তাগণ আরও বলেন, বিভিন্ন অফিস এবং দপ্তরে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে একের পর এক অনিয়ম করে চলেছেন। এমনকি বিজ্ঞ জেলা জজ আদালতকেও ভুল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করতেও পিছপা হয়নি। তাছাড়া মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে আব্দুল হাকিমের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও তার স্বাক্ষরে শিক্ষাবোর্ড যশোরকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এহেন কর্মকান্ডে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শঙ্কিত। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে পরীক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন এবং গত জুন মাসথেকে বেতনভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অত্র বিদ্যাপীঠের সকল শিক্ষক-কর্মচারী।
বেতনভাতার কথা বলতে গেলে সভাপতি মনগড়া ভিত্তিহীন আশার বানী শোনাচ্ছেন এবং কাল ক্ষেপন করছেন এবং সভপতিসহ আদুল হাকিম এবং অফিস সহকারীর কাছে একাধিকবার লাঞ্চিত হয়েছেন শিক্ষকরা। দীর্ঘদীন বেতনভাতা না পেয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। এহেন চরম বিপত্তির হাত থেকে রক্ষা পেতে অভিভাবক, এলাকাবাসী ও সুধী সমাজ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক ম মোনায়েম হোসেন, আক্তার হোসেন শাহীন, আলতাফ হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, মিজানুর রহমান, শিমুল হোসেন, হোসাইন গাইন, এসএসসি পরীক্ষার্থী জোবায়ের হোসেন ও ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সিমি প্রমুখ অভিভাবকবৃন্দ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।