সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি: শ্যামনগরের নকিপুর হাটের তোয়া বাজারের জায়গা বন্দাবস্তে আওয়ামীলীগ নেতা, সাংবাদিক ও অব্যবসায়ীদেরকে বরাদ্দ অভিভোগ উঠেছে। তোয়া বাজারের দখল বন্দোবস্ত গ্রহণকারীদের নিকটে দখল হস্তন্তরের ফলে বর্তমানে আন্দোলন , সংগ্রাম চলছে। শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক , উপজেলা চেয়ারম্যান এস,এম, আতাউল হক দোলনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি গ্রæপ তোয়া বাজার দখল বন্দে মানববন্ধন, ও আন্দোলন করছেন অপর দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, সাতক্ষীরা নারী ও শিশু কোটের বিজ্ঞ পি পি ও শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস,এম, জহুরুল হায়দার বাবুর নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগের অপর একটি গ্রæপ বিক্ষোভ সমাবেশ করে তোয়া বাজার দখল বন্দ না করা হলে শ্যামনগরের এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার হুশিয়ারী দিয়েছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন তোয়া বাজারে যাদেরকে দোকান ঘর বরাদ্দ দিয়ে দখল হস্তন্তর করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ ব্যাবসায়ী নয়।
তোয়া বাজারে বরাদ্দ দেওয়া দোকান ঘরের দখল হস্তন্তরে জন্য জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা কার্যালয়ের এস এ শাখা থেকে গত ইং-২৫-০৩-২০২১ তারিখে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর স্বাক্ষরিত এক পত্র শ্যামনগরের এসিল্যান্ডকে দেওয়া হয়। ঐ পত্রে যাদের অনুকুলে দোকান ঘর বুঝে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তারা কেউ নকিপুর হাট বাজারের ব্যাবসায়ী নয়। এর আগে জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরার অফিসের ৭৭/১৮ নং মিস কেসে তোয়া বাজারের এই জায়গায় দেওয়া বন্দোবস্ত সমুহ বাতিল করা হয়। সে সময়কার জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল এই চান্দিনা লাইসেন্স গুলো বাতিল করেন। আবার একই কেসে চান্দিনা লাইসেন্স গুলো বহাল করে দখল বুঝে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা অফিসের ঐ চিঠিতে যাদের নাম আছে তাদের মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা, সাংবাদিক, ও প্রভাবশালীরা আছেন। যার কারণে উপজেলার প্রানকেন্দ্রের এই বাজারে এত বড় ঘটনায় সাংবাদিক মহলে তেমন কোন সাড়া জাগেনি বলে আন্দোলনকারীরা বলছেন। জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে দখল বুঝে দেওয়ার জন্য গত মার্চ মাসে পত্র দেওয়া হলেও দখল বুঝে না দেওয়ায় লাইসেন্স গ্রহিতারা হইকোটে রিট আবেদন করেন। হাইকোট ৫৯৯৬/২১ নং রিট মামলায় আবেদন নিস্পত্তি করার আদেশ দিলেও আবেদন নিস্পত্তির বদলে দখল হস্তন্তর করায় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী ও সুধি সমাজের ভেতর ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় সারা শ্যামনগরে চরম ক্ষেভের সৃষ্টি হলে আজ সোমবার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আজ সোমবার সকালে শ্যামনগর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে নির্মান কাজ বন্দ করে দেওয়া হয়। পুলিশ কাজ বন্দ করে দিয়ে যাওয়ার পরে আবারও কাজ শুরু করলে স্থানীয় ইউ পি সদস্য আসলাম হোসেন তার লোকজন নিয়ে নির্মান কাজ বন্দ করে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগরের সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন , এই চান্দিনা লাইসেন্স গুলো তার আমলে দেওয়া হয়নি এবং তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের লিখিত নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন মাত্র। তিনি আরও বলেন লাইসেন্স গ্রহিতারা ঐ বাজরের ব্যাসায়ী কি না তা আমাদের দেখার বিষয় নয় কারন ব্যাবসায়ী হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয় । আর ঐ লাইসেন্স আমলে নিয়ে চান্দিনা ল্ইাসেন্স দেওয়া হয়। ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, তোয়া বাজার রক্ষায় চান্দিনা লাইসন্স গুলো বাতিলের জন্য তার কার্যালয় থেকে আজ ৪ অক্টোবর সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি পত্র প্রেরন করা হয়েছে। এই পত্র পাওয়ার পরে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে শ্যামনগর থানার মাধ্যমে নির্মান কাজ বন্দ রাখা হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে শ্যামনগর সদর ইউনিয়রের চেয়ারম্যান নারী ও শিশু আদালতের বিজ্ঞ পি পি এ্যাডঃ জহুরুল হায়দার বাবু বলেন, তিনি তার কন্যার ভর্তির কাজে বাইরে থাকার সুবাদে অ-ব্যাবসায়ীদের অনুকুলে তোয়া বাজারের দখল বুঝে দেওয়া হয়।
তিনি ঘটনাটি জানার সাথে সাথে বাড়ী ফিরে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী ও সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ২৪ ঘন্টার ভেতর নির্মান কাজ বন্দ করার আল্টিমেটাম দেন। তার দেওয়া ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামের ১০ ঘন্টার ভেতর সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক নির্মান কাজ বন্দ করে দেওয়ায় তিনি জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন ব্যাবসা শুরু করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুকরা হয় কিন্তু লাইসেন্স নেওয়ার পরে ব্যাবসা না করলে অভিযোগ পেলে ঐ লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন , শ্যামনগরের তোয়া বাজারের বিষয়টি নজরে নিয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।