নিজস্ব প্রতিনিধি: শূন্য-কার্বন ভিত্তিক টেকসই উন্নয়নের দাবিতে কালিগঞ্জে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার কাঁকশিয়ালী নদীর তীরে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে এবং পার্টিসিপেটরি রিসার্স একশান নেটওয়ার্ক (প্রাণ) এর সহযোগিতায় বিন্দুর নির্বাহী পরিচালক জান্নাতুল মাওয়ার সভাপতিত্বে ও সভাপতি জাকিয়া রাজিয়ার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ নারীরা। এসময় তারা কার্বন উৎপাদনকারী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামনে ক্রস চিহ্ন নিয়ে জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক যে কোন অবকাঠামো, কারখানা, উৎপাদন, ব্যবসা বিপন্ননের বন্ধের দাবী জানান।
তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ বাংলাদেশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে নানাভাবে নানান দূর্যোগের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে সাইক্লোন, লবনাক্ততা, বন্যা, জলাবদ্ধতা, বেঁড়িবাঁধ ভাঙনসহ নানান ভয়াবহ দূর্যোগের মধ্যে দিয়ে বেঁচে আছে। ফলে একদিকে হারাচ্ছে ভিটেমাটি, সম্পদ। মানুষ হচ্ছে উদ্বস্তু অন্য দিকে সামাজিক, অর্থনৈতিক, সহিংসতার সমূখীন হচ্ছে উপকূলবাসী। এখানে নারীরা আছে সবথেকে বেশি ঝুঁকির মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয় কার্বন ডাই অক্সাইড। শিল্পবিপ্লবের পর থেকে তাই কার্বন উৎপাদনের একটা বড় অংশ হচ্ছে কার্বনভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থা এবং এর বাণিজ্য। সবচেয়ে বেশি কার্বন উৎপাদক দেশগুলো তালিকায় রয়েছে ধনীদেশগুলো।
বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে বহু পরে থাকলেও বিভিন্ন পরিসংখ্যন বলে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ১৯ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরী করে। যার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী এনার্জি এবং বিদ্যুৎখাত। অনবায়ণ যোগ্য উৎস থেকে ক্রমাগত কার্বন ডাই অক্সাইডের মত গ্রীণ হাউজ গ্যাস নির্গমন বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রাথমিক নিয়ামক। জীবাশ্ম জ¦ালানীর ব্যবহার, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেগা প্রকল্প কারনেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও বাংলাদেশ কার্বন উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে গন্য হয়। জলবায়ু পরিবর্তন সংকট মোকাবেলায় আগামি ১ থেকে ১২ নভেম্বর শুরু হতে যাচ্ছে বিশ^ জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬। এই কপ অনুষ্ঠানে নীতিনির্ধারন, আগামিতে করনীয় এবং দায়িত্ব বন্টন করা হবে। তাই এই প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানিকে সম্পূর্ণ বাতিল করে পুনব্যবহারযোগ্য শক্তিতে রুপান্তরের মাধ্যমে একটি সবুজ পৃথিবীর দাবী জানান তারা।