নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের মারকা গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছোড়া এসিডে মারাত্মক দগ্ধ হওয়া ওয়াহেদ ঢালি ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর নির্যাতন, বসত বাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে ও মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সাতক্ষীরার ৭৯ জন এসিড সারভাইবার বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছেন। তারা অবিলম্বে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা থেকে ওয়াহেদ ঢালীর ছেলে আল আমিনকে মুক্তি দিয়ে ওয়াহেদ আলীর মামলা রেকর্ড করার জোর দাবি জানান।
রবিবার সকালে সাতক্ষীরা শহরের আমতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বহু ঘটনায় এসিডে পুড়ে আমরা শারীরিক সক্ষমতা হারানোর পাশাপাশি সম্পদও হারিয়েছি। ওয়াহেদ ঢালি ২০০৮ সালে এসিড আক্রান্তদের একজন উল্লেখ করে তারা বলেন, এখন বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন মাঠে ঘাটে জোন ও কামলা খাটা। অন্ধ ও অক্ষম হওয়ায় অনেককে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে হয়েছে। এরপরও প্রতিপক্ষের লোকজন ওয়াহেদ ঢালির বাড়িঘর কেড়ে নিতে মারধর করছে। আমরা এর প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচার চাই। শাহানা খাতুনের সভাপতিত্বে এসিড সারভাইবারদের মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, নুরুননাহার, সফুরা খাতুন,কাছেদ গাজি, সোনালী খাতুন প্রমূখ। তারা হামলার জন্য দায়ী প্রতিবেশী গহর ঢালি, অরজু ঢালি ও লিটন ঢালিকে গ্রেফতারের দাবি জানান। তবে, এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে তার জানা নেই। অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।
এদিকে, মানববন্ধন শেষে এসিড আক্রান্ত ৭৯ জন নারী ও পুরুষের হাতে করোনাকালিন সহায়তা হিসেবে ইস্টার্ন ব্যাংকের সহায়তায় আর্থিক অনুদান তুলে দেন সমাজ সেবা বিভাগের উপপরিচালক একেএম শফিউল আযম, অ্যাকশন এইডের নুরুন্নাহার বেগম, জাহাঙ্গির হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা জোহরা, মাহবুবুর রহমান, স্বদেশ পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, আবু মুসা প্রমূখ। অহেদ ঢালী কালের কণ্ঠকে জানান, প্রতিবেশী ওহাব ঢালী ও অদুদ ঢালীর সঙ্গে তার জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে প্রতিপক্ষ ওহাব ঢালী, তার স্ত্রী রাশিদা খাতুন, তাদের ছেলে অদুদ ও লিটন, অদুদের স্ত্রী হীরাসহ অজ্হাতনামা তিনজন তাদের নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করতে থাকলে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা বাধা দেন।
এ সময় ওহাব ঢালীসহতার সঙ্গে থাকা লোকজন লোহার রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকেসহ স্ত্রী মোমেনা খাতুন, ছেলে আলাউদ্দিন, পুত্রবধূ ফাহিমা খাতুনকে পিটিয়ে জখম করে। লোহার রডের আঘাতে তার ডান পায়ের হাঁটুর উপরে, মুখমন্ডলে ও মেরুদন্ডে মারাত্মক জখম হয়। স্ত্রী মোমেনার বাম হাতের হাড় ভেঙে যায়। পুত্রবধু ফাহিমার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ছেলে আলমগীরের বুকে ও পিঠে জখম করা হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে ভর্তি করায়।