Site icon suprovatsatkhira.com

বিগত কয়েক বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে পাটের দাম প্রান্তি কৃষকের হাসি

মীর খায়রুল আলম, নিজস্ব প্রতিনিধি: সোনালী আঁশ পাট। দেশের প্রধান অর্থকারী ফসল হিসাবেও পরিচিত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকরা পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। বিগত বছরগুলোতে আবহাওয়ার প্রতিক‚ল পরিবেশ আর উৎপাদন ছাড়া বাজার মূল্য কম থাকলেও এ বছর তা ভিন্ন। তাই এই পরিবেশ বিরাজ করলে দেশের এই প্রধান রফতানি শিল্প পাট ও পাটজাত দ্রব্য বিশ্ব বাজারে জোগান বাড়াতে পারে মনে করেন কৃষক।

বিগত বছরগুলোতে শ্রমিক খরচ আর দোকান মালিকের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়ে কম টাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিক্রয় করতে বাধ্য হয় কৃষক। আর এতে এক দিতে লাভবান হন মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে কৃষকরা সঠিক দাম না পেয়ে চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেন অনেকে। তবে এ বছর সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে পাট। আবারও পাটের সুদিন ফিরে আসছে। পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাট ও পাটজাত দ্রব্যে ব্যবহার বাড়াতে ভোক্তাদের আগ্রহী করা হচ্ছে। অপরদিকে পাট চাষে আগ্রহী করতে চাষিদেরকে সরকার থেকে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। এবছর থেকে আবারও পাটের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন চাষিরা। মাঝখানে পাটের আবাদ কমলেও আবারও পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়ানো সম্ভব হলে পাটের আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।

সুন্দরবনের কোলঘেঁষা সাতক্ষীরা জেলা পাট চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। এ বছর জেলা সব উপজেলায় পাট চাষ হয়েছে। ফলন ও উৎপাদন ভালো হওয়ায় এবং দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম হওয়ায় সঠিক সময়ে পাট বীজ বপন ও উৎপাদন করতে পেরেছেন কৃষক। তাছাড়া পরিমিত বৃষ্টিতে পাট জাক দেওয়া এবং আঁশ ছাড়াতে সমস্যা হয়নি তাদের।

পাট চাষি রব্বানী আলী দফাদার জানান, এবছর ২বিঘা জমিতে পাট চাষ করছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে। পাট বিক্রি শেষে। তিনি আরো বলেন, বিগত বছরে যে খানে পাটের আঁশ ১৫শ টাকা মন বিক্রি হত, সেখানে এবার ২৬,৫০ থেকে শুরু করে সাড়ে ২৭শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। পাট চাষ করে বিগত দশ বছরেও এমন দাম পায়নি। সরকার এবার পাটের দাম বৃদ্ধি করায় আমরা অনেক খুশি। আশা এমন দাম পেলে আগামীতে আরো পাটের আবাদ বাড়বে।

পাট চাষি নিপু দাশ জানান, পাট বীজ বপন থেকে কাটা ও বিক্রি পর্যন্ত কৃষি বিভাগ আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি সরকারি বীজ ও সার পেয়ে আমরা খুব সহজে পাট চাষ করতে পেরেছি। এবছর পাটের দাম খুবই ভালো। পাটের পাশাপাশি পাট খড়ি ৬০/৭০ টাকা দরে আঁটি বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম পেয়ে আমরা খুবই খুশি প্রকাশ করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর জানান, প্লাস্টিকের বস্তা ও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের পরিবর্তে পাটের তৈরী মোড়ক ব্যবহারে সরকার জোর দিয়েছেন। পাটের বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে বহুগুণ এগিয়ে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করবে পাট শিল্প।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version