Site icon suprovatsatkhira.com

কলারোয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থী গ্রেপ্তার ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রচার মাইক ভাঙচুর তালায় নৌকার প্রার্থীর কর্মীদের হাতুড়ি পেটায় আহত ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: তালা ও কলারোয়ায় ইউপি নির্বাচনে হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কলারোয়ার জয়নগর ইউনিয়নে তিন বিদ্রোহী প্রার্থীর হুমকিতে কোন ঠাসা হয়ে পড়েছে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী (নৌকা প্রতীক)। ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সম্পাদক বিদ্রোহীদের পক্ষে পৃথকভাবে অবস্থান নেয়ায় বিএনপি প্রার্থীর জয়ের পাল্লা ভারী হচ্ছে।

অন্যদিকে গত ৫ এপ্রিল কলারোয়ায় দলীয় প্রার্থীসহ দুই বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের সাথে ত্রি মুখী সংঘর্ষের পর দায়েরকৃত মামলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মারুফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা শহর থেকে আটক করা হয়। তিনি কেড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের হেমায়েত উদ্দীনের ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদ্য বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবির জানান, বুধবার সকাল ১১টায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মারুফ হোসেন নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন ও তার নেতাকর্মীর উপর হামলা মামলার ২নং আসামি।

মামলার বাদী নৌকার প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইনের স্ত্রী শ্যামলী রানী গাইন। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে দায়ের করা দুই বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ৩৮ জনের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী মারুফসহ এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় এবং দলীয় প্রার্থীর (নৌকার) নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর ও দলীয় প্রার্থীসহ তার কর্র্মীদের মারপিট করে আহত করার ঘটনায় বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন ও বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিলকে ইতমধ্যে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে।

কলারোয়ার লাঙ্গলঝাড়া প্রতিনিধি রাজু রায়হান জানান, কলারোয়া উপজেলার ৫নং কেঁড়াগাছী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিলের আনারস প্রতীকের প্রচার মাইক ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময়ে প্রচার গাড়ি থেকে প্রচারের সরঞ্জাম লুট করা হয়। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার সময় ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের তালসারি নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। ইউনিয়নে নৌকা প্রার্থী ও তার সমার্থক দের সাথে দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার সমার্থকদের সাথে সংঘর্ষ হওয়ার পর থেকে ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত ছোট বড় ঘটনা ঘটেই চলছে।

প্রচার ম্যান কামরুজ্জামান বলেন, আনারস প্রতীকের প্রচার করার সময় স্থানীয় তালসারির আগে নূনুর বাড়ির কাছে একটি মোটরসাইকেল বহর প্রচার মাইক বন্ধ করে প্রচার গাড়ি ভাঙচুর করে হরিলুটের মতো জোরপূর্বক প্রচারের সরঞ্জাম কেড়ে নেয়। এসময় আমি কাউকে চিনতে পারিনি। তালা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্মীরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ৫ কর্মীকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এসময় চায়ের দোকানে বসা ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মইনুর ইসলামকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্মীরা। আহতদের উদ্ধার করে তালা হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। এসময় কয়েকটি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আহতরা হলেন-তালা উপজেলার দোহার গ্রামের আরশাদ গোলদারের ছেলে সাইদ গোলদার (৪৫), রহিম বকসের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩৮) ও আটুলিয়া গ্রামের সলিম সরদারের ছেলে মশিয়ার রহমান (৪২), ইনতাজ আলীর ছেলে সাইদ (৩০) ও শফিকুল ইসলামের ছেলে মঈনুর হোসেন (৪০)। আটুলিয়া বাজারের মেম্বার প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সানা, আমিনুর ইসলাম ও মুদি দোকনদার আশরাাফুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটুর কর্মীরা আটুলিয়া বাজারের চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিল।

এমন সময় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তির ভাই সন্ত্রাসী সাদেক সরদার ও মোশারফ সরদার মশার নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের উপর হঠৎ হাতুড়ি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ৫ জনকে গুরুত্বর আহত করে। স্থানীয় এগিয়ে এলে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তির ভাই সন্ত্রাসী সাদেক সরদার, মোশারফ সরদার মশা, মকবুল ও সমির বেহারা অস্ত্র উচিয়ে গুলি করার হুমকি দিতে থাকে। তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু জানান, নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল ইসলাম মুক্তি নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে তার সন্ত্রাসী ক্যাডাররা অবৈধ অস্ত্র, রাম দা ও শতাধিক হাতুড়ি নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী ও ভোটারদের উপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, রাতের আধারে পোস্টার, ব্যানার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে এবং এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। শান্ত এলাকাকে অশান্ত করে তুলছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এখনও কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version