নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ২০ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় ইউপি নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা কেড়াগাছি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের ত্রি মুখী সংঘর্ষে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থীসহ ৯ জন আহত হয়েছে। গত রবিবার রাতে উপজেলার ৫নং কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের উত্তরপাড়া মসজিদ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে দলীয় দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য জানানো হয়।
প্রতাক্ষদর্শীরা জানায়, কলারোয়া উপজেলার ৫ নং কেড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে গত রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেনের মোটর সাইকেল প্রতীকের নির্বাচনি কার্যালয় ভাংচুর করে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা। এ ঘটনা জানাজানি হলে, বিকেলে মারুফ হোসেনের কর্মী-সমর্থকরা পাল্টা স্থানীয় কাকডাঙ্গা মোড় এলাকায় নৌকার নির্বাচনি কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। এ ঘটনায় রাত ৮টার দিকে বোয়ালিয়া উত্তর পাড়া এলাকায় আওয়ামীলীগের আর এক বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল ও নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ভুট্টোলাল গাইন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হাতে নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা রক্তাক্ত আহত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
আহতরা হলেন, মোছলেউদ্দীন গাইনের পুত্র নৌকার প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন (৫৫), কিতাবুদ্দীন গাজীর পুত্র সিরাজুল গাজী (৪৫) ও ফারুক গাজী (৫৭), শাহজাহান গাজীর স্ত্রী আনেছা খাতুন (৫৫), রেজাউল ইসলামের পুত্র শহীদ হোসেন (২৫), আজিজুল সরদারের পুত্র মন্টু (২৫), আব্দুল আলীর পুত্র আব্দুল বারিক (৫০), গোলাম মোস্তফা গাইনের পুত্র হাবিবুর রহমান (২৬) ও তবিবর গাজীর স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (১৮)। সবার বাড়ি একই এলাকায়।
আহতদের কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সিরাজুল গাজী ও আনেছা খাতুনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, ১০ জনকে আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। মহিলাসহ দুইজনকে রেফার্ড করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ৭ জন আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খাইরুল কবীর জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবিষয়ে জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম জানান, দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতা কর্মীদের মারপিটের ঘটনায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের নির্দেশনায় উক্ত দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় শৃংঙ্খলা ভংগের অভিযোগে দলীয় পদ থেকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। ইউপি নির্বাচন ঘিরে সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক আছে।