আমাদের পৃথিবী একটাই আর সে পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখতে একশনএইড বাংলাদেশ তরণদের নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শুক্রবার দুপুরে (২৪ সেপ্টেম্বর) তৃতীয়বারের মতো গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকের আয়োজন করে। এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে প্রায় শতাধিক তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিসহ ১৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
অন্যদিকে জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবি ও জনগনকে সচেতন করতে একই সময়ে বাংলাদেশের ১৯টি জেলায় একশনএইড বাংলাদেশ এর ৯টি লোকাল রাইটস প্রোগ্রাম এবং ‘ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস’ ও ‘বিন্দু’ নামের ২টি যুব প্ল্যাাটফর্মের তরুণরা এই আয়োজনে অংশ নেয়। জলবায়ু নিয়ে বাংলাদেশের তরণদের চিন্তা ভাবনাগুলো আসন্ন কপ-২৬ সম্মেলনে তুলে ধরতে ও বিশ্ব নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে একশনএইড বাংলাদেশ এর রেজিলিয়েন্স এন্ড ক্লাইমেট জাস্টিস এবং ইয়ং পিপল টিম যৌথভাবে এ ক্লাইমেট স্ট্রাইকের আয়োজন করে।
একইসাথে বাংলাদেশের তরুণরা ‘ফ্রাইডে ফর ফিউচার’ এবং ‘গেøাবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ আন্দোলনকে বেগবান করতে এবছরের গেøাবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক-এর মূল প্রতিপাদ্য ‘আপরূট দ্যা সিস্টেম’ এর সাথে সংহতি প্রকাশ করে।
এসময় তরুণরা দলমত নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের সাথে নিয়ে জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবি ও জনগনকে সচেতন করতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফেস্টুন ও প্লে¬কার্ড হাতে মৌনভাবে অবস্থান নেয়। তাদের প্লে-কার্ডগুলোতে প্রকাশ পায় পৃথিবীকে জলবায়ু সংকট থেকে বাঁচিয়ে তুলার আকুতি। প্লে¬কার্ডে তাদের প্রতিবাদের অক্ষরে লিখা দাবি ‘আমাদের পৃথিবী একটাই’; স্টপ! লিসেন টু মাই আর্থ; বার্ন বর্ডারস নট কয়েলস; ট্রিট এভরি ক্রাইসিস এজ ক্রাইসিস; লাভ ট্রিস প্ল্যান্ট ট্রিস সহ জলবায়ু বিষয়ক জনসচেতনতামূলক স্লোগান।
জলবায়ু বিজ্ঞানীদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে তরুণরা দাবি করেন তাপমাত্রার অর্ধ ডিগ্রী বৃদ্ধি পৃথিবীতে খরা, বন্যা, দাবদাহ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ নানারকম সংকটের সৃষ্টি করবে। এর ফলে তলিয়ে যেতে পারে ভূপৃষ্টের অনেক অংশ যা ব্যহত করবে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে। বাড়বে দারিদ্র্য, বিশেষ করে এর বড় প্রভাব পড়বে পৃথিবীর দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের উপর। ধনী কিংবা গরীব কেউই এর প্রভাববলয় থেকে বের হতে পারবে না। তবে মহিলা, শিশু ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের উপর এর যে প্রভাব পড়বে-তা উত্তরণ হবে চ্যালেনাজিং।
জলবায়ু বিষয়ে জনগন ও নীতিনির্ধারকদের সুবিবেচনার জন্য স্ট্রাইকের বিকল্প নেই বলে জানান এতে অংশগ্রহণকারী একজন জলবায়ুকর্মী। ভবিষ্যত প্রজন্ম ও বাসযোগ্য পৃথবীর জন্য এটুকু করা বাঞ্চনীয়। যত তাড়াতাড়ি আমরা কাজ করবো তত তাড়াতাড়ি এ পৃথিবী সুরক্ষিত হবে।
এসময় জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ বিশেষত কৃষক, নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা। এটি মানুষের স্বাস্থ্য, জীবিকা, অভ্যাসসহ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাকে বাড়িয়ে তুলছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে রাখা এবং জলবায়ুর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহবান জানান তারা।
এ বিষয়ে একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় ও ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে তরণদের অংশগ্রহন জরুরি। বিশ্বব্যাপী তরুণরা তাদের সমস্যা ও চিন্তাার কথা বিশ্বনেতাদের কাছে তুলে ধরতে চায় মূলত কপ-২৬ প্ল্যাাটফর্মের মাধ্যমে। তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের টিকার প্রশ্নে কপ-২৬ সম্মেলন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। যেখানে ভবিষ্যৎ এবং বর্তমান তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত সে সম্মেলন কতটুকু অর্থবহ হবে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে জানান তিনি। একই সাথে তিনি কপ প্রেসিডেন্সি ও বিশ্ব নেতাদের কাছে এ বার্তা পাঠানোর জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপ ও সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)।