আগস্ট ১৩, ২০২১
জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে আন্দোলন করা দুই কৃষক গ্রেপ্তার
জাহাঙ্গীর আলম লিটন কলারোয়া : কলারোয়ায় পানি নিষ্কাশনের দাবিতে আন্দোলনরত দুই কৃষকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছে উপজেলা চেয়ারম্যান। ইতোমধ্যে তাদের আটকও করেছেন পুলিশ। ১২ আগস্ট বৃহস্পতিবার কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বাদী হয়ে কৃষক আমজাদ হোসেন ও নেছার আলীর বিরুদ্ধে কলারোয়ায় থানায় ২৫(১)২৯(১)৩১(২) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮, আক্রমণাত্মক ভাবে মানহানীর উদ্দেশ্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করিয়া জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অপরাধে একটি মামলা ইং ১০(৮)২১ দায়ের করেন। উক্ত মামলার উপজেলা পৌর সদরের মুরারীকাটি গ্রামের মৃত বাবুর আলীর সানার ছেলে আমজাদ হোসেন সানা (৫০) ও একই গ্রামের মোমিন গাজীর ছেলে নেছার আলী গাজী (৫৩) কে পুলিশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আটক করেন। জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার মুরারীকাটি, কুমারনল ও কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের বিলটিতে ২১ বছর যাবত জলাবদ্ধতা থাকায় তিন গ্রামের সমন্বয়ে ধান চাষের জন্য একটি সেচ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির মাধ্যমে বিদ্যুতের শক্তিশালী মিটার ও পাম্প স্থাপন করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে পানি নিষ্কাশন করে ধান চাষের উপযোগী করা হয়। চলতি মৌসুমে আড়াই হাজার বিঘা জমি স্ব-স্ব কৃষক ধান চাষ করেন। পূর্বের জলাবদ্ধতার কারণে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জবর দখল করে একটি মৎস্য ঘের করে। সেচের কারণে তার ঘেরের পানি শুকিয়ে যায়। সম্প্রতি বর্ষার কারণে পানি জমে ধানের ক্ষতি হতে পারে ভেবে উজানের একটি কালভার্টের মুখ আটকিয়ে দেওয়া হয় এবং পাশ^বর্তী সরকারি চাঁন মল্লিকের খাল দিয়ে পানি বেত্রাবতীনদীতে নামানোর জন্য একটি শক্তিশালী পাম্পের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান লাল্টু তার অবৈধ মৎস্যঘের রক্ষায় ঘেরে পানি ঢোকানোর জন্য খালের মুখ বন্ধ করে কালভার্টের মুখটি খুলে দিয়ে আড়াই হাজার বিঘা ধানী জমিতে পানি প্রবাহিত করে। ফলে সেখানে সমস্ত ধান পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ হাজার প্রান্তিক কৃষক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ঘটনায় কৃষকরা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন এবং ১২ আগস্ট সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঁচা ধান দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি এবং স্মারকলিপি প্রদান করে। এতে উপজেলা চেয়রাম্যানের সম্মানের হানি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করেন তিনি। পরবর্তীতে গ্রামবাসী উক্ত কালভার্টের মুখ খুলে দেয়। এনিয়ে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করার জন্য আম জাদ হোসেন ও নেছার আলী গত ৯আগস্ট দুপুর ১২.৪৭ মিনিটে একটি ফেইসবুক পেইজ (অনলাইন পোর্টাল) থেকে অসত্য মানহানিকর সংবাদ সম্মেলন করে। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খায়রুল কবীর জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ২ব্যক্তি আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে সপোর্দ করা হয়েছে।
8,605,822 total views, 13,701 views today |
|
|
|