খায়রুল আলম সবুজ, খলিষখালী (পাটকেলঘাটা) প্রতিনিধি: খলিষখালীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রতিবন্ধী হোসেন মোড়ল (২৩)। দীর্ঘ ৮ বছর তিনি বিছানায় শুয়ে জীবন যাপন করছেন। পাটকেলঘাটার খলিষখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের টিকারামপুর গ্রামের গনি মোড়লের ছেলে হোসেন মোড়ল ও তার বৃদ্ধ মা মলুদা বেগম (৬০) কে নিয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দেয়া ঘরে বসবাস তার। পিতা গনি মোড়ল অন্য জায়গায় বিয়ে করে সেখানে সংসার করছে। ১টি যময ভাই আছে, নাম হাসান মোড়ল ।
বিয়ে করে আলাদা থাকে । সেও অসুস্থ। শনিবার (২৮ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবন্ধী হোসেন মোড়লের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আজ ৮ বছর এক বিছানায় শুয়ে আছি। ওঠার ক্ষমতা নাই। আমার বৃদ্ধ মা এখান ওখান থেকে চেয়ে চেয়ে খাবার আনলে তাই আমাদের খাওয়া জোটে। মা টাও দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তার পা ব্যথা। এখন আর তেমন হাটতে পারে না। আমি আগে প্রতিবন্ধী ছিলাম না। আজ থেকে আট বছর আগে আমি দলুয়া কলেজের মাঠে ফুটবল খেলা দেখার জন্য কলেজের দু’তলায় উঠতে যাই। সেখানে ওঠার সময় কলেজের বৈদ্যুতিক তার লুচ থাকায় সেখান থেকে সর্ট খায়।
সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। পড়ে স্থানীয়রা আমাকে নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করায়। কিন্তু সেখানে আমার ভাল কিছু হবে না বলে খুলনা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানেও ভাল কিছু হবে না বলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর অনেক টাকা পয়সা লাগবে বলে আমাকে আর চিকিৎসা না দিয়ে আমার মা আমাকে বাড়ী নিয়ে চলে আসে। তখন আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ি। বাড়ী আসার পর টাকা পয়সার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমি দিন দিন প্রতিবন্ধী হয়ে যাই। এখন আমার ২ পা ও ২ হাত অচল। আজ ৮ বছর বিছানায় শুয়ে থাকি। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী আমাকে একটি ঘর উপহার দিছে বলে ভালভাবে থাকতে পারছি। এতদিন খুব কষ্টে একটি কুড়ে ঘরে থাকতাম। কিন্তু ঘর দিয়ে কি করব।
যদি প্রতিদিন ঠিকমত খেতে না পারি। স্থানীয় সোহরাব হোসেন বলেন, আসলে এ পরিবারটি খুব অসহায়। এই ছেলেটাকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। খলিষখালী ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক মোজাফফর রহামান জানান, তার আসলে অনেক উন্নত চিকিৎসার দরকার। যদি ভাল চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে সে আবার আগের মত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে বলে আশা করা যায়। সাহায্য সহযোগীতাও করছি ব্যক্তিগত ভাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছেও হোসেন মোড়ল আবেদন করেছে সরকারী সহযোগীতা পাওয়ার জন্য। সে সহযোগীতা যাতে তাড়াতাড়ি পায় তার ব্যবস্থা করব।