শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ: কালিগঞ্জে প্রতিনিয়ত বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের প্রায় বাড়িতে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছে মানুষ। দিন যতই যাচ্ছে সচেতন মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। ইতিমধ্যে কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে। তারমধ্যে আরও দুঃখের বিষয় উপজেলার সাড়ে ৫ লক্ষের অধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ধুঁকছে জনবল সংকটে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না তারা।
রোগীদের সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করেছিলেন। হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও প্রয়োজনের তুলনায় জনবল না থাকায় তীব্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিন হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর মিলিয়ে শতাধিক রোগি আসেন। সেখানে কয়েকজন চিকিৎসক দিয়ে দায়িত্ব পালন অনেকটা দুরূহ হয়ে পড়ে। রবিবার হাসপাতালে ৭৮ জনকে করোনা টেস্ট করানো হয়। এরমধ্যে পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ২৯ জনের। গত জুন মাসের ৯ তারিখ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে করোনার টেস্ট করা হয়েছে ৬০৬ জনের। তারমধ্যে পজিটিভ শনাক্ত ২৭৮ জন।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম। সেখানে জুনিয়র কনস্যালটেন্ট (সার্জারী) পদে কেউ নেই। জুনিয়র কনস্যালটেস্ট (মেডিসিন) পদে কেউ নেই। জুনিয়র কনস্যালটেস্ট (এ্যানেসথেসিয়া) পদে কেউ নেই। জুনিয়র কনস্যালটেস্ট (গাইনি) পদে কেউ নেই। মেডিকেল অফিসার ২ জনের জায়গায় ১ জন রয়েছে তবে তিনিও সংযুক্তিতে সদর হাসপাতালে। ডেন্টাল সার্জন পদে কেউ নেই। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১ম শ্রেণিতে ৪ জনের জায়গায় রয়েছে ৩ জন। তাদের মধ্যে সংযুক্তিতে রয়েছেন ২ জন।
সহকারী সার্জন (ইউনিয়ন) ৮ জনের জায়গায় রয়েছে ৫ জন। তাদের মধ্যে সংযুক্তিতে রয়েছে ৪ জন। সিনিয়র স্টাফ নার্স ২০ জনের জায়গায় রয়েছে ১৪ জন। তাদের মধ্যে ১ জন সংযুক্তিতে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। মিডওয়াইফ নার্স ৪ জনের জায়গায় ১ জন রয়েছে।
উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মিডওয়াইফ ৪ জনই সংযুক্তিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অফিস সহকারী কাম মদ্রাক্ষরিক ৩ জনই রয়েছে তবে তাদের মধ্যে ১ জন সংযুক্তিতে নলতা ম্যাটসে। চিকিৎসা সহকারী ১৪ জনের জায়গায় রয়েছে ৪ জন। তারমধ্যে সংযুক্তিতে ১ জন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে। ফার্মাসিষ্ট ৬ জনের জায়গায় ৪ জন রয়েছে। মেডিকেল টেকনলজিস্ট (ল্যাব) ২ জনই রয়েছে তবে ২ জনই সংযুক্তিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
মেডিকেল টেকনলজিস্ট (ডেন্টাল) পদে কেউ নেই। মেডিকেল টেকনলজিস্ট (রেডিও) পদে কেউ নেই। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১০ জনের জায়গায় ৮ জন রয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারী ৫০ জনের জায়গায় ৩৭ জন। গাড়ী চালক কেউ নেই তবে আউট সোসিং পদে ১ জন রয়েছে। জুনিয়র ম্যাকানিকের জায়গায় কেউ নেই। এম এল এস এস (অফিস) ৮ জনের জায়গায় ৭ জন। এরমধ্যে ১ জন নলতা ম্যাটসে। আয়া পদে কেউ নেই। নিরাপত্তা প্রহরী পদে কেউ নেই।
মালী পদে কেউ নেই তবে ১ জন আউট সোসিং পদে রয়েছে। কুক পদে কেউ নেই তবে আউট সোসিং পদে রয়েছে ২ জন। পরিচ্ছন্ন কর্মী ৫ জনের জায়গায় ৪ জন রয়েছে। তার মধ্যে ১ জন নলতা ম্যাটসে আর আউট সোসিং পদে রয়েছে ১ জন।
এমতাবস্থায় সাধারণ রোগীসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জনবল বাড়াতে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।