Site icon suprovatsatkhira.com

মায়ের কাছে ফিরে আসছে ৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া আশাশুনির সাঈদ

আশাশুনি প্রতিনিধি: ৬ বছর আগে ঢাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে আশাশুনি থেকে ফিরে পেতে যাচ্ছেন অভাগীনি মা। হারিয়ে যাওয়া আবু সাঈদ (১৪) বর্তমানে বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আশাশুনিতে রয়েছে।
আবু সাঈদের বয়স তখন মাত্র ৮ বছর। স্বামী পরিত্যাক্তা ছাবিনা খাতুন তার পিতার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার দেলুয়ারকান্দি গ্রামে আশ্রয় নেয়। পিতার কাঁধে কতদিন বসে বসে খাবে এচিন্তায় সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে ঢাকায় পাড়ি জমায়। গার্মেন্টস ফ্যাকন্টরিতে চাকুরী পায়। শিশু পুত্র সাঈদ (৮) ভাড়া বাাসয় থাকত। মা যখন কাজে শিশু সাঈদ তখন পথে-দোকানে ঘুরে বেড়াত। এক পর্যায়ে সে দুষ্টচক্রের সাথে সঙ্গ দিতে শুরু করে।

একদিন পুলিশ তাকে উঠিয়ে নিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। মা এঘটনা জানতে পারেনি। পুত্র হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে মা আশপাশে খোঁজাখুজি ও কখন বাচ্চা ফিরে আসবে সে আশায় অশ্রæ বিসর্জন দিতে থাকে। কিন্তু না আর ফিরে আসেনি। এদিকে ৩ মাস পর সেন্ট্রাল জেল থেকে ছাড়া পায় সাঈদ। কিন্তু মাকে আর খুঁজে পায়নি সে। আবারও সে পথশিশু হিসাবে বেড়ে উঠতে থাকে। কিছুদিন পর আবারও পুলিশ তাকে পথ থেকে তুলে নিয়ে শেষমেষ নারায়নগঞ্জ এতিমখানায় ঠাঁই করে দেয়। নারায়নগঞ্জে তার জীবন ছিল দীর্ঘস্থায়ী। সেখান থেকে মাত্র দেড় মাস আগে তাকে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনিতে অবস্থিত বিভাগীয় এতিম ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
আশাশুনির কিছু সাংবাদিক অন্য একটি তথ্য নিতে গিয়ে আবু সাঈদের কথা জানতে পেরে তার সাক্ষাৎকার ভিডিও ধারণ করেন। এরপর ঝক-ঞঠ খরাব এ পোষ্ট করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভিডিও মালায়েশীয়া প্রবাসী দেলুয়াকান্দির জনৈক ব্যক্তি দেখে তার মনে হয় এই সাঈদ ছাবিনার ছেলে। সে পোষ্টটি তাদের গ্রামের বন্ধুদের কাছে শেয়ার করেন। এই পোষ্ট সাঈদের নানী মোমেনা দেখে কন্যা ছাবিনাকে জানান। ছাবিনা ও পরিবারের অন্যরা দেখে শানাক্ত করেন যে, এ সাঈদ তাদের সন্তান। তারা আশাশুনির সাংবাদিকদের সাথে মোবাইলে কথা বলার পর সাংবাদিকরা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে সাঈদের সাথে তার মা, নানী, মামাসহ অন্যদের কথা বলিয়ে দেয় বুধবার (২৭ জুলাই)।

৬ বছর আগে ৯ বছর বয়সে ঢাকা থেকে মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছিল আবু সাঈদ । মা ছিল একজন গার্মেন্টস কর্মী। মা অনেক খুঁজেও হারানো ছেলেকে পায়নি সেদিন। আবু সাঈদ সবাইকে দেখে চিনে ফেলে এবং তার মা-নানী-মামা তাকে দেখে চিনতে পারে। মুহূর্তেই অপরপ্রান্তে (বাড়িতে) খুশির কান্নার রোল পড়ে যায়। তারা জানায় বৃহস্পতিবারই তারা আশাশুনিতে আসছে তাদের পুত্রকে নেওয়ার জন্য। এদিকে ৬ বছর পর বাড়িতে মা-নানী-মামাদের কাছে ফেরার আনন্দে আশাশুনির এতিমখানায় খুশিতে অশ্রæ ঝরাচ্ছে সাঈদ।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version