নিজস্ব প্রতিনিধি: কালিগঞ্জে গ্রাম-গঞ্জের প্রায় বাড়িতে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছে মানুষ। প্রতিদিন বাড়ছে করোনা রোগির সংখ্যা। গত জুন মাসের ৯ তারিখ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত উপজেলায় ৭৭৭ জনকে করোনা পরীক্ষা করানো হয়। তারমধ্যে পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে ৩৫৯ জন। ইতিমধ্যে কয়েক জনের মৃত্যুও হয়েছে। জনবল সংকটে ধুঁকছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। রোগীদের সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দিন যতই যাচ্ছে সচেতন মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়ছে। তবে দুঃখের বিষয় এই পরিস্থিতির মাঝেও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলা সদরের কুশুলিয়ায় প্রতি বুধবার বসছে জমজমাট পশুর হাট। আর শনিবার বসছে শুধুমাত্র পণ্যের হাট। বুধবার বেলা ১২ টার দিকে ওই হাটে গেলে দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মুখে মাস্ক পরার কোনো বালাই নেই। হাজার হাজার মানুষের সমাগম হচ্ছে ওই পশুর হাটে। এছাড়া সেখানে হাটবার হিসেবে বিভিন্ন পণ্যের বাজারে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ করা গেছে। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।
মাস্কবিহীন কয়েক জন গরু বেপারির সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, মাস্ক পকেটে আছে। প্রচন্ড গরমে দম ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ আমাদের ওসব করোনা ফরোনা হবে না। ওই সময়ে এ প্রতিবেদক তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা পরিচয় না দিয়ে উল্টো হাসাহাসিতে লিপ্ত ছিল। মাস্ক বিহীন বাজারে গরু কিনতে আসা মেহেদী হাসান নামে এক ব্যক্তি বলেন, সাংবাদিক ভাই ভুল করে মাস্ক বাড়িতে ফেলে রেখে এসেছি।
পথে এসে কিনবো ভেবে ছিলাম, কিন্তু দোকান বন্ধ থাকায় কেনা হয়নি। তবে এবার হাটে আসলে অবশ্যই মাস্ক নিয়ে আসবো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী সজলের ছোট ভাই কাজী বায়জিত হাটটি ইজারা নিয়েছে। তারা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতায় অপব্যবহার করে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিদারছে পশুর হাট চালিয়ে যাচ্ছে। হাটের ইজারাদার কাজী বায়জিতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে হাটটি ইজারা নিয়েছি।
সরকারি নিয়মে হাট পরিচালিত হচ্ছে। সকাল থেকে ১১ টা পর্যন্ত হাট চলছে। এছাড়া হাটে লোক সংখ্যা কম। আর যারা আসছে সবাই সচেতন। এদিকে এব্যাপারে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন মতেই গরুর হাট বসতে দেওয়া যাবে ন। যারা সরকারি নিয়ম অমান্য করে হাট বসাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।