নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দরে যানজট নিরসন কমিটির কর্মতৎপরতায় ভোমরা স্থলবন্দরে যানজট মুক্ত হওয়ায় একটি স্বার্থান্বেষী ও কুচক্রী মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। বিগত সময়ে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের প্রধান সমস্যা ছিল যানজট। সেই যান জট নিরসনে ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শ্রমিক ইউনিয়ন ও স্থানীয়দের নির্দেশ ও পরামর্শক্রম এবং আলোচনার মাধ্যমে গঠিত ভোমরা স্থলবন্দর যান জট নিরসন কমিটি স্থলবন্দর এলাকাকে এখন যানজট মুক্ত করেছে।
ভোমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক নেতা আনারুল ইসলাম গাজী বলেন, সড়ক শৃঙ্খলার নামে চলছে সড়কে বিশৃঙ্খলা। চলছে নিরব চাঁদাবাজী। সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহাঙ্গির হোসেন শাহিন ও জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কারো কাছ থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই জোরপূর্বক সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে থেকে ও ভোমরা গাংনিয়া ব্রিজ এই দু’টি পয়েন্টে ভোমরা স্থলবন্দরের ট্রাক, ইঞ্জিন ভ্যান, গরু বহনকারী বিভিন্ন যানবাহন আটকে রেখে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে রাত অবধি চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী ও চালকরা অসহায় হয়ে তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিচ্ছে।
বিগত সময়ে প্রশাসন থেকে এই চাঁদাবাজী বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা আজো প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে বহাল তবিয়তে চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে। এতেও তাদের পেট ভরছে না। শকুনের চোখ পড়েছে ভোমরা স্থলবন্দরে। এজন্য তারা ভোমরা স্থলবন্দরের যানজট নিরসন কমিটির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করে যাচ্ছে। কিন্তু বিগত সময়ে উভয় কমিটি রমজান মাসে ভোমরা স্থলবন্দরে একই সাথে কাজ করেছে। উভয় কমিটির মধ্যে ব্যবধান এটাই ভোমরা স্থলবন্দরে যানজট নিরসনে বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে যানজট নিরসন কমিটি ভোমরা স্থলবন্দরের জমির উপর ১২২ গাড়ী ইট ও ৪০ গাড়ী বালি ফেলে গর্ত ভরাট করে পার্কিং এর ব্যবস্থা করেছে। স্থানীয় এলাকার বেকার হয়ে পড়া শ্রমিক ও পণ্য খালাসী প্রায় ৪০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে এই কমিটি। প্রতিদিন শত শত গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা, ট্রাক ড্রাইভার ও শ্রমিকদের সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও সড়কের ধারের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা যানজট মুক্ত হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ^াস ফেলেছে। মঙ্গলবার (১৫ জুন) সরেজমিনে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় গেলে ভোমরা স্থলবন্দরে যানজট নিরসন কমিটির গাড়ী পাকিং এ বাংলাদেশী ট্রাক ড্রাইভার ইসমাইল, হৃদয়, শাহাদাত ও রাজু শেখসহ কয়েকজন ট্রাক ড্রাইভার জানান, আগে আমাদের রাস্তার উপর পড়ে থাকতে হতো। আমাদের ট্রাকের বিভিন্ন ক্ষয় ক্ষতি হতো এবং চলাচলে অনেক অসুবিধা হতো। এখন আমরা অনেক ভাল আছি।
ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, মো. শামীম হোসেন ও মিজান হার্ডওয়ার জানান, বিগত সময়ে ভোমরা বন্দরে মালবাহী শত শত ট্রাক রাস্তার উপরে থাকতো। চলাচলে নানা ভোগান্তীতে পড়তো মানুষ। এছাড়াও প্রতিনিয়ত সড়ক দূঘর্টনা ঘটতো। কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। যানজটের কারণে আমাদের ব্যবসা চালাতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতো। এখন যানজট নিরসন কমিটি যে উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা অনেক স্বস্তিতে আছি।
এব্যাপারে ভোমরা স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ১১৫৫) এর সভাপতি আনারুল ইসলাম গাজী, ভোমরা স্থলবন্দর গোডাউন হ্যান্ডলিং (রেজিঃ নং ১১৫৯) সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, ভোমরা স্থলবন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ ১৭২২) সভাপতি মো. কওছার আলী সরদার, ভোমরা বন্দর ও হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ১৯৪৬) সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, ভোমরা স্থলবন্দর খুদ্র বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম, ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক বহু মুখি সমবায় সমিতি (রেজিঃ ৮৭/সাত) এর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কবির হোসেন,
ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতি (রেজিঃ নং ৮৬/৭) এর সভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, ভোমরা স্থলবন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতি (রেজিঃ নং ৮৬/৭) এর সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ফেডারেশন ভোমরা বন্দর শাখার সাধারণ সম্পাদক আজিবুর রহমান আলিম জানান, ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জনপ্রতিনিধি, মালিক-শ্রমিক, ব্যবসায়ী সকলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে ভোমরা স্থলবন্দরের যানজট নিরসনে ও বেকার শ্রমিক ও পণ্য খালাসীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে।
কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ভোমরা স্থলবন্দরকে যানজট মুক্ত করতে ভোমরা স্থলবন্দর যানজট নিরসন কমিটির কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার আহবান জানিয়েছে ভোমরা স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জনপ্রতিনিধি, মালিক-শ্রমিকও ব্যবসায়ীরা।