Site icon suprovatsatkhira.com

পাটকেলঘাটা বাজারের অধিকাংশ রাস্তার বেহাল দশা: ভোগান্তি পাচ্ছে এলাকাবাসী

নাজমুল হক, পাটকেলঘাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটা বাজারের রাস্তাগুলোর বিভিন্ন জায়াগায় ভেঙ্গেচুরে খানা খন্দে পরিণত হয়েছে, নিদারুণ ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছে জনসাধারণ। রাস্তাগুলির এ বেহাল দশার যেন দেখার কেউ নাই। রবিবার (১৩ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, পাটকেলঘাটার বাজারের গোডাউন রোডের রাস্তাটি ভেঙ্গে এমন খানা খন্দে পরিণত হয়েছে যে, প্রতিদিন পাল্টি খাচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন। মালবাহী পরিবহন তো দূরের কথা একটি বাইসাইকেল, মটর সাইকেল, ইজিবাইক, ইঞ্জিনভ্যানও এ রাস্তা দিয়ে পার হতে গেলে অপরের সাহয্যের প্রয়োজন হয়। প্রায় দেখা যায় ভারী যানবাহনগুলো গর্তের ভিতর হাটু পর্যন্ত কাঁদা পানির মধ্যে দেবে যাওয়ায় প্রায় যানযটের সৃষ্টি হয়। নিয়মিত এ রাস্তায় চলাচল কারী সবুজ, চা বিক্রেতা আয়ুব আলী বলেন, আমাদের নিয়মিত এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে এ রাস্তাটি ভেঙ্গে এমন খানা খন্দে পরিণত হয়েছে যে রাস্তাটি পার হওয়ার সময় জামাকাপড়ে কাঁদামাটি লেগে যায়। তাছাড়া প্রায় দেখি দু’একটা যানবাহন উল্টে পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমাট থাকে হাটু পর্যন্ত। তাছাড়া এ রাস্তাটির দুধারে পানি নিষ্কাষনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা করতে গিয়ে ঠিকাদাররা দু’ধারে খনন করে প্রায় দেড় দুই মাস ফেলে রেখেছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো হাটু সমান কাঁদা পানিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পথচারী ও দু’ধারের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের রাস্তাটি অল্প পানিতেই তলিয়ে যায়। রাস্তার অনেক জায়গায় ইট বালি উঠে গিয়ে খানা খন্দে পরিণত হয়েছে। ক্রেতা সাধারণ এ রাস্তায় চলতে অনিহা দেখায় ফলে রাস্তার দু’ধারে ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ীরা দারুণ বিপাকে পড়েছে। ইলেকট্রনিকস ব্যবসায়ী হাসানুর রহমান বলেন, রাস্তার এ বেহাল দশায় ক্রেতা সাধারণ রাস্তায় চলাচল কম করার কারণে আমাদের বেচাকেনা অনেক কম হচ্ছে।

ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালাতে না পারায় অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দ্বিধা দ্ব›েদ্বর কারণে এ রাস্তাটি দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। এভাবে পাটকেলঘাটা হাই স্কুল রোডটি বিভিন্ন জায়গায় পিচ উঠে প্রায় হাটু পর্যন্ত খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই কোন কোন জায়গায় খানাখন্দের ভিতর জমে থাকা ঘোলা কাঁদা পানিতে পথচারীদের জামা কাপড় নষ্ট হতে দেখা যায়। পাটকেলঘাটার হাই স্কুল রোডের পুরানো পোস্ট অফিসের সামনে কয়েকটি জায়গায় পিচ, ইট, বালি উঠে গিয়ে এমন গর্তে পরিণত হয়েছে রাস্তাটুকু পার হতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারীদের। একবার এ রোডে কেউ ঢুকলে দ্বিতীয়বার এ রোডে ফিরতে চাইবে না। এ রাস্তার পাশের এক ব্যবসায়ী মাসুদ কবির বলেন, রাস্তাটি এমন বেহাল দশা ও খানাখন্দে পরিণত হয়েছে যে, প্রতিদিন দু’একটা যানবাহন এ রাস্তায় পাল্টি খায় এবং ঘোলা কাঁদা পানি এতই জমে থাকে প্রতিদিন গাড়ী চলাচলের সময় আমার ঘরে ঘোলা কাঁদা পানি ছিঁচকে উঠে। করোনার মহামারির কারণে লকডাউন থাকাই একেত বেচা কেনা কম তারপর রাস্তাগুলোর বেহাল দশার কারণে ক্রেতা সাধারণ কাঁদাপানিতে বাজারে ঢুকতে চাই না।

এছাড়া পাটকেলঘাটা টাওয়ার রোডটি অল্প বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায়, যেন নৌকা দিয়ে পার হওয়ার মত উপক্রম হয়। এ রাস্তার বেহাল দশার কারণে দু’ধারে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা বিপাকের মধ্যে আছে। এ রাস্তার এক বস্ত্র ব্যবসায়ী তামান্না গার্মেন্টস এর মালিক আ: হালিম জানান, রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে রাস্তার বেহাল দশার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যের দারুণ মন্দা হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত উঠেছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটু পানি জমে থাকে এবং গাড়ি চলাচলের সময় ঘোলা কাদা পানি ঘরের ভিতর ঢুকে নাস্তানাবুদ অবস্থায় পরিণত হয়। এভাবে পাটকেলঘাটার কালিবাড়ী রোড, ডাকবাংলো রোড, গরুহাটা রোড, বলফিল্ড রোড, মজুমদারের গুদাম রোড, পুলিশফাড়ির রোড সহ পাটকেলঘাটার প্রায় রোডগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। ফলে ভোগান্তি পাচ্ছে এলাকাবাসী। রাস্তাঘাটের এ বেহাল চিত্র এবং পানির ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিষ্কাশনের সমস্যার বিষয় নিয়ে পাটকেলঘাটার সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ রাস্তাগুলো মাননীয় এমপি সাহেবের হাতে তিনি যদি না করেন আমাদের কিছু করার নাই। তবে রাস্তাগুলো টেন্ডার হয়ে গেছে কবে শেষ হবে তা জানি না। । আমি চাই তাড়াতাড়ি রাস্তাগুলো শেষ হোক। জনগণের ন্যায় আমিও চরম ভোগান্তি পাচ্ছি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version