তালা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার তালায় পুকুরের পানিতে ফেলে ৮দিন বয়সী কন্যাকে হত্যা করার অভিযোগে মা শ্যামলী ঘোষ গ্রেফতার হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার রায়পুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তালা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আটক শ্যামলী ওই গ্রামের মানিক ঘোষের স্ত্রী। পরপর ৩টি কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণের পর চতুর্থ সন্তানও কন্যা হওয়ায় স্বামী মানিক ঘোষের নির্যাতন সইতে না পেরে নির্মম এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে ঘাতক মা দাবী করেছেন। পৈশাচিক এই ঘটনার পর থেকে গোটা এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়ে। তালার রায়পুর গ্রামের রণজিৎ ঘোষ জানান, তার চাচাতো ভাই মানিক ঘোষের প্রথম পুত্র সন্তান অঙ্কুশ পানিতে ডুবে মারা যায়। এরপর মানিক ঘোষ-শ্যামলী ঘোষ দম্পতির ঘরে পরপর ৩টি কন্যা সন্তান হয়। ১টি পুত্র সন্তানের আশায় তারা আবাও সন্তান নেন। কিন্তু গত ৮দিন আগে নিজ বাড়িতে বৌদি শ্যামলী ঘোষের আবারও কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বৌদির ঘরে ৮দিন বয়সী চতুর্থ কন্যাকে দেখতে না পেয়ে এদিন বিকালে তার কাছে সন্তানের কথা জিজ্ঞাসা করলে সে উদ্ভট কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই কন্যাকে বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেবার কথা বলে। কিন্তু পুকুরে লাশ বা ওই মেয়েকে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নেয়া হয়। রাত ১০টার দিকে বৌদি শ্যামলীকে আবারও জিজ্ঞাসা করলে সে একই কথা বলে। পরে গ্রামের লোকজন নিয়ে পুকুরে আবারও তল্লাশি করে পানিতে শিশুটির লাশ ভাসমান দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়।
তালা থানার ওসি মো. মেহেদী রাসেল বলেন, খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে পুকুর থেকে শিশু কন্যার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় শিশুর মাতা শ্যামলী ঘোষ (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (২ জুন) সকালে শিশুর মৃতদেহ সাতক্ষীরা মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়। এঘটনায় মানিক ঘোষের চাচাতো ভাই রণজিৎ ঘোষ বাদী হয়ে (বুধবার) তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রণব ঘোষ বাবলু বলেন, মানিক ঘোষ ও শ্যামলী ঘোষ দম্পতির প্রথম পুত্র সন্তান অঙ্কুশ ঘোষ শিশু বয়সে পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। এরপর থেকে মা’ শ্যামলী ঘোষ কিছুটা মানষিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। এব্যপারে অভিযুক্ত মা শ্যামলী ঘোষ বলেন, ৩টি কন্যার পর ৪র্থ সন্তান হিসেবে আবারও কন্যা সন্তান হওয়ায় মাদকসেবী স্বামী মানিক ঘোষ আমার উপর মানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। কন্যা সন্তান জন্মানোর দায়ে গত ১সপ্তাহ ধরে সে বাড়িতে আসা-যাওয়া এবং খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে আমাকে নানান গালিগালাজ ও হুমকি দিতো। একারণে বাধ্য হয়ে মেয়েকে পুকুরের পানিতে ফেলে দিই।