জুন ১৬, ২০২১
আশাশুনির প্রতাপনগর: জোয়ারে ডোবে ভাটায় জাগে
নিজস্ব প্রতিনিধি : ভাটিতে রান্না হয়, জোয়ার এলে খাওয়া দাওয়া। লোনা পানিতে সারা দেহে ঘা হয়ে হয়ে গেছে। সহায় সম্পদ সব শেষ। বাচ্চা ছেলে মেয়ে নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র পরে কেমন আছেন জানতে চাইলে প্রতাপ নগরের বাসন্তী রাণী (৩০) এভাবেই তাদের ঠিকে থাকার কথা জানান। তার মতো অসহায় শত শত মানুষের একই কথা। প্লাবিত প্রতাপনগরের মানুষ হিসেবে তারা তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এখন সেখানে অথৈ পানিতে নদী আর জনপদ মিলে মিশে একাকার। প্লাবিত প্রতাপনগর ইউনিয়নের মানুষের দুঃখ দুর্ভোগ দুর্দশার চিত্র গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ফলে এখন সবার জানা। চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রতাপনগর বাসি। ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে এলাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অজানা গন্তব্যের দিকে চলেগেছে অনেক পরিবার। এছাড়া পৈতৃক বসত ভিটা নদী ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে জলবায়ু শরণার্থী রুপে উদ্বাস্তু হয়ে সীমাহীন অসহয় মানবতার জীবন যাপন করছে অনেক পরিবার। উপায়ান্ত না পেয়ে অসহনীয় যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে মানুষ বেঁচে আছে সীমাহীন দুঃখ কষ্টে। ঘরবাড়ি বিধস্ত হওয়া পরিবারগুলো প্লাবিত এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হলে নৌকা যোগে ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই। কিন্তু সেখানে তাদের কেউ খোঁজ রাখে না বলে আক্ষেপ করেছেন অনেক বানভাসি। এক সময়ের সমৃদ্ধশালী প্রতাপনগরের চলাচলে আজ নৌকাই ভরসা তাদের। ইতোমধ্যে গ্রামের ভিতরের ছোট ছোট রাস্তাগুলো বিধ্বস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার প্রেক্ষিতে নৌকায় চলাচলের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জীবনের একান্ত নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যেসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতাপনগরের প্রাণ কেন্দ্র তালতলা বাজারে আসতে নৌকা ই চলাচলের বাহন হিসাবে যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস/যশ প্রভাবে নদীতে জলোচ্ছ¡াসে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রতাপনগর ইউনিয়ন আম্পানের পর ফের প্লাবিত হয়ে যায়। এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানি বন্দি অবস্থায় সীমাহীন দুর্ভোগ ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। রান্না, খাওয়া, দৈনন্দিন প্রাকৃতিক কাজ, সর্বোপরি দুর্বিষহ জীবনের অন্ত নেই। বর্তমানে হরিশখালির দুটি ভাঙন পয়েন্ট ও শ্রীপুর কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ অংশের ভাঙন পয়েন্ট ও প্রতাপনগর সংলগ্ন পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা গ্রামের একটি ভাঙন পয়েন্ট দিয়ে প্রতাপনগর ও বন্যতলায় নিয়মিত ভাবে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর জোয়ার ভাটা বয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে হরিশ খালির দক্ষিণ পশ্চিম অংশের ভাঙন পয়েন্ট ভাঙন আটকানোর ছয় ঘণ্টাও টেকেনি। 7,191,029 total views, 485 views today |
|
|
|