Site icon suprovatsatkhira.com

আষাঢ়ের বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত উপক‚লীয় কৃষি

গাজী আল ইমরান, নিজস্ব প্রতিনিধি: বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়,লবনাক্ততা,খরা উপক‚লীয় মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী।এর মধ্য দিয়েই উপক‚লের মানুষ কৃষি কে আঁকড়ে ধরে জীবিকায়ন চলমান রেখেছে। কৃষি উপক‚লের মানুষের প্রাণ। বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সংগ্রামী মানুষগুলো কৃষিকে আঁকড়ে ধরে উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করে বার বার। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন একেবারেই পিছু ছাড়ছেনা। গত মাস দেড়েক আগে খরার কারনে কৃষি মাঠ ছিলো ধুধু মরুভূমি। এরপর বর্ষার দেখা পেয়ে মাঠে নতুন ফসলের কুড়ি জন্মাবে এমন স্বপ্ন দেখা মাত্রই সেই স্বপ্নকে ভেঙে গুড়িয়ে দেয় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।

ইয়াসের প্রভাবে নদীর পানি প্লাবিত হয়ে একাকার হয়ে যায় মৎস্য ঘের ও ফসলের মাঠ। ইয়াস পরবর্তী কালীন সময়ে মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখেন ফসলের ক্ষেত এবং মৎস্য খামার নিয়ে। আষাঢ়ের চতুর্থ দিনে ভারি বর্শায় আবারো প্লাবিত হয়েছে উপকূল।সরজমিনে বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়,কৃষক তার কৃষি ক্ষেতে বীজ বপনের পর গাছের নতুন কুড়ি বের হওয়ার সাথে সাথে আবারো বর্শার পানি ডুবে গেছে কৃষি ক্ষেত। উপজেলার মুন্সিগঞ্জের ধানখালি এলাকায় গিয়ে দেখাযায় কিছুদিন পূর্বে কৃষক অবনি মন্ডল পুইশাক, ঢেড়স,বরবটি সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি রোপণ করলেও বর্ষার কারণে তা রয়েছে পানির নীচে। এসময় অবনি মন্ডলকে পুইশাকের ডাটা তুলতে দেখা যায়। তবে সময়ের আগেই অবনি মন্ডল তার ক্ষেতের পুইশাক তুলে ফেলছেন বলে জানান।এসময় তিনি জানান বহু অর্থ খরচ করে খামারে সবজি লাগালেও তা আষাঢ়ের শুরুর বর্শাতে শেষ করে দিয়েছে। ধুমঘাটের কৃষাণী অল্পনা রানী মিস্ত্রি বলেন,খরার কারণে এবারের বর্শা মৌসুমের সবজি খেত প্রস্তুত করতে দেরি হয়েছে।

খেত প্রস্তুত করে ফসলের বীজ বপন করলেও তা এক বর্শায় শেষ হয়ে গেছে। উপজেলার রমজননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামের শতবাড়ির কৃষাণী আমেনা বেগম বলেন, গত ৩০ বছরের মধ্েয এরকম ভাবে ডুবে যায়নি। ৩০ বছর আগে শ্রাবণ মাসে এইরকম ভাবে ডুবে গিয়েছিল। তখন ক্ষেতের আমন মৌসুমের ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। অতিবৃষ্টির কারণে ডুবে গেছে।তাছাড়া পানি ঠিকমত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই।যেখান থেকে পানি নিষ্কাশিত হবে সেইসব জায়গা অন্যরা নেট ও পাটা দিয়ে রেখেছে। তিনি আরো বলেন প্রকৃতির ভারসাম্য নেই প্রকৃতি আর তার নিয়মে চলছে না। যার কারণে কখনও অনাবৃষ্টি আবার কখনও ভারী বৃষ্টি।এসময় তিনি পানি দ্রæত নিষ্কাশনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান।তিনি বলেন ভিটা উচু না করলে এভাবে চাষাবাদ করার উপায় নেই। যা হয়েছে তাতে করে নতুন করে আবার ফসলের বীজ বপন করতে হবে। তিনি আরো জানান তার পুকুর থেকে মিষ্টি পানির মাছ ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার। আমেনা বেগমের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার হাজারো কৃষক যারা বীজ বপন করে সফলতার স্বপ্ন বুনছিলেন।

আউশের ধান নিয়ে কথা হয় বংশিপুর কয়ালপাড়া গ্রামের প্রবীণ কৃষক পরিতোষ কয়াল এর সাথে। তিনি বলেন,আউশের ধান রোপন করেছি সমিতির কিস্তি তুলে।কিন্তু তা জলে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এনামুল ইসলাম বলেন,টানা বৃষ্টিতে মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও তা এই মুহুর্তে নিরুপন করা সম্ভব হচ্ছে না।তবে এভাবে পানি বন্দি থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার মজুমদার বলেন,অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মৎস্য ঘের একাকার হয়েছে। আমরা অনেকের পরামর্শ দিয়েছিলাম ঘের কিংবা পুকুরের চারপাশে নেট দিতে।অনেকেই আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী দিয়েছেন আবার অনেকেই আমাদের পরামর্শ রাখেন নি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version