Site icon suprovatsatkhira.com

বাড়ছে নদীর পানির উচ্চতা: রাতের জোয়ারে বেড়িবাধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর আগমনে আগে থেকেই সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে বতাসের গতিবেগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে নদীর পানির উচ্চতা। আইলা-আম্ফানে প্লাবিত হওয়া শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার মানুষ আবারো লোকালয়ে লোনা পানি প্রবেশের আশঙ্কা করছেন। ইতিমধ্যে জোয়ারে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে শ্যামনগর উপজেলার কয়েকটি অঞ্চলে বেড়িবাধ ছাপিয়ে লোকালয়ে লোনা পানি প্রবেশ করছে। উপকূলবাসীর শঙ্কা রাতের জোয়ারে কয়েকটি বেড়িবাধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় “ইয়াস” এর আগমনি বার্তায় উপক‚লীয় এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষের একমাত্র চিন্তা হয়ে দাড়িয়েছে জরাজীর্ণ বেঁড়িবাধের ভাঙন। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এর আগমনী বার্তা পাওয়ার সাথে সাথেই সাতক্ষীরা দুর্যোগ ব্যবস্থপনা কমিটি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার উপকূলীয় এলাকার ১৬৪৫টি আশ্রয় কেন্দ্র। বর্তমানে উপকূলবাসীকে সেইসব আশ্রয় কেন্দ্র নেওয়া হচ্ছে।

শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, জোয়ারে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েকটি বেড়িবাধ ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তিনি আরও জানান, ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ গুলোর মধ্যে ৫টি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ যার মধ্যে ঝাপা, পশ্চিম পাতাখালি, কামালকাটি, বন্যাতলা ও চাউলখোলা। ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে ১৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে মোট জনসংখ্যার তুলনায় এটি অত্যন্ত নগণ্য।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট ইতিমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। সেগুলো পশ্চিম দুর্গাবাটিতে ৩টি, পূর্ব দুর্গাবাটিতে ২টি, দাতিনাখালি আজিজ ম্যানেজারের বাড়ির সামনে ১টি, মহাসিন সাহেবের হুলা নামক স্থানে ১টি, চুনা ও কলবাড়ীতে ১টি। দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ৯টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান ওই ইউপি চেয়ারম্যান।

মুন্সিগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল জানান, ইউনিয়নটিতে বেড়িবাঁধের ৫ জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হচ্ছে বড় ভেটখালী খালের গোড়া। এছাড়া দক্ষিণ কদমতলা, সিংহরতলী, চুনকুড়ি ও মৌখালী নদীর ধারও ঝুকিপূর্ণ। ইউনিয়নটিতে দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি।

দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেন, ইউনিয়নটিতে গত আম্পানে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছিল। গাবুরা ইউনিয়নটি সম্পূর্ণ একটা দ্বীপ হওয়ায় চারিপাশ থেকেই পানির চাপ থাকে। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি জোয়ার উঠলেই ইউনিয়নের মানুষ ভীতির মধ্যে থাকে। এরপরও নেবুবুনিয়া, গাবুরা, নাপিতখালি, চকবারা, কালীবাড়ি, জেলেখালি ও দৃষ্টিনন্দন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ইউনিয়ন টিতে ১৫ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রত্যেকটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে বর্তমানে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতের জোয়ারে কয়েকটি বেড়িবাধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ

দিকে বেড়িবাঁধের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম জানান, দুর্যোগের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধগুলো পরিদর্শন করেছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কম্পার্টমেন্ট-৩ এর ১০.৫ কিলোমিটার বেডড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে গেছে। একটা প্যাকেজের কাজ শুরু হয়েছে। আগের তুলনায় বেড়িবাঁধের অবস্থা এখন ভালো।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version