Site icon suprovatsatkhira.com

উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি: শ্যামনগরে জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।ফোরামের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম তা লিখিত বক্তেব্যে বলেন,জলবায়ু পরিবর্তন বিশ^ব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে গোটা বিশ^ হুমকির মুখে পড়েছে। বৈশি^ক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারনে এই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে, যে কারনে সারা বিশ^ চিন্তিত। চিন্তিত বাংলাদেশ সহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপক‚লবাসি। দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ঝুঁকির মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলবাসীকে এই ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ করতে দরকার নতুন ধরনের পরিকল্পনা।

দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের এই সমস্যা উপস্থাপনের জন্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করার দাবীতে সরকারের নীতিনির্ধারনী মহলকে সংবেদনশীল করতে জরুরী জাতীয় পর্যায়ে সংলাপের আয়োজন করা প্রয়োজন। এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষ উপক‚লীয় অঞ্চলে বসবাস করে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত প্রভাবে যদি এক মিটার সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা বাড়ে তাহলে উপক‚লের ১৫% স্থলভাগ হারাতে হবে এবং ৩ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু/শরনার্থী হতে পারে। কৃষি, শিল্প, অবকাঠামো(স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, রাস্তা-ঘাট, সেতু-কালভার্ট ইত্যাদি), জীবিকা, বনজ সম্পদ, সামুদ্রিক সম্পদ, মানব স্বাস্থ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।৫৭৭০০ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিশে^র বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভ‚মিতে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ মোট ৪২৩টি প্রজাতি। সুতরাং জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব এই বনভ‚মির বাস্ততন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় কৃষি জমিতে লবন পানি উত্তোলন করে চিংড়ী চাষ করায় দিন দিন কৃষি জমির লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ফসল চাষের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে। শুধুমাত্র সাতক্ষীরা অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন প্রতি বছর গড়ে ৩.৪৫% হারে কমে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে বর্তমানে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬ থেকে ১৫ দশমিক ৯ পিপিটি। খুলনা জেলার ২২%, সাতক্ষীরার ১৩% এবং বাগেরহাটের ১৫% মানুষ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত। এটি গড় সংখ্যা যা শহর থেকে দক্ষিণ এলাকায় এই সংকট আরও বেশি।

সুপেয় পানির জন্য একজন নারীকে ৩/৪ কি.মি. পথ হাঁটতে হয় প্রতিদিন।এসময় তিনি তাদের দাবী সম্পর্কে বলেন,১.দক্ষিণ পশ্চিম উপক‚লীয় এলাকাকে দুর্যোগ ঝুকিপুর্ন এলাকা ঘোষনা করতে হবে ২.উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।৩. জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ পুন:নির্মান করতে হবে,৪.জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার সহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, ৫.বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে, ৬.উপক‚লীয় সকল মানুষের খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে,৭. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্ব জলবায়ু তহবিল থেকে যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়, তার সর্বোচ্চ ব্যবহারে নিশ্চিত করতে হবে,৮. দুর্যোগ প্রবণ দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলবাসীর জানমাল সুরক্ষায় কার্যকর অবকাঠামো সুবিধা গড়ে তুলতে হবে,৯.ঝড়-ঝঞ্ঝা, নদীভাঙন ও ভূমি ক্ষয় ঠেকাতে উপক‚ল, দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং প্যারাবন বা সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে,১০.সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version