ডেস্ক রিপোর্ট : কলারোয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। গত বছরের তুলনায় এবছর বোরো ধান ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে। প্রায় ৮০ শতাংশ জমির ধান পেকে গেছে। ওই পাকা ধান কাটতেও শুরু করেছেন তারা।
উপজেলার জালালাবাদ এলাকার বোরো চাষি শফিকুর ইসলাম জানান, ‘এবার ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ফলন আরো ভালো হতো যদি বৃষ্টি হতো। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। সেচ পাম্পের পানির স্তরও অনেক নিচে নেমে গেছে’।
কৃষক তৌহিদুল ইসলাম জানান, ‘আমি ১ বিঘা জমিতে জামাই বাবু ধান চাষ করেছি। এতে আমার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। আমার জমিতে আশা করছি ৩০ থেকে ৩৫ মন ধান হবে। আশা করছি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।
উপজেলার অধিকাংশ কৃষক জানান, ‘করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি নিয়েও কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা আমাদের কাছে এসে সব সময় ভালো পরার্মশ দিয়েছে। কোন সময় কি ঔষধ ব্যবহার করতে হবে সে পরার্মশও দিয়েছেন তারা। তাদের পরামর্শ আর আমাদের নিবিড় পরিচর্যা আমাদের মুখের হাসির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার ধানের ন্যায্য দাম পেলে হয়’।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ও পৌরসভায় ১২ হাজার ৫শ’ ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এর মধ্য ১০ হাজার ৪শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে উফশী ধান চাষ হয়েছে এবং ২ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড বোরো ধান চাষ হয়েছে।
এর মধ্য দেয়াড়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৫শ’ ১৪ হেক্টর, যুগিখালী ইউনিয়নে ১ হাজার ৫২হেক্টর, জয়নগর ইউনিয়নে ১ হাজার হেক্টর, কয়লা ইউনিয়নে ৪শ’ ১০ হেক্টর, লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নে ৭শ’ হেক্টর ও পৌরসভায় ৮শ’ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। হাইব্রিড ধানের মধ্য তেজগোল্ড ৫শ’ ৭০ হেক্টর, সিনজেন্টা (১২০৩) ১শ’ ৫২ হেক্টর, শক্তি (২) ১৮ হেক্টর, এসএল-৮ এইচ ৯শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
উফশী জাতের মধ্য ব্রিধান-২৮ চাষ হয়েছে ৫হাজার ৪শ’ ২০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৫০ চাষ হয়েছে ৫শ’ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৫৮ চাষ হয়েছে ৬০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৬৩ চাষ হয়েছে ৩শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৬৭ চাষ হয়েছে ৩শ’ ৯০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৭৪ চাষ হয়েছে ২০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৮১ চাষ হয়েছে ১ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৮৬ চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে, ব্রিধান-৮৮ চাষ হয়েছে ১০ হেক্টর জমিতে, বিনাধান-১০ চাষ হয়েছে ৪০ হেক্টর জমিতে, মিনিকেট চাষ হয়েছে ৯শ’ ১০ হেক্টর জমিতে, শুভলতা ১ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, ‘আমরা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনা দিয়েছি এবং বিনামূল্যে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল বিজ সহায়তা করেছি। এছাড়া কৃষক ধানের দাম ভালো পাওয়ার কারণে বোরো ধান চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের’।
তিনি আরও জানান, ‘এবার ধানের দাম ভালো পেলে আগামিতে বোরো ধান চাষে কৃষকের আগ্রহ আরো বাড়বে বলে মনে করছি’।