এপ্রিল ১২, ২০২১
দেবহাটায় টানা ৮ বছর মৌমাছির সাথে বসবাস করেন সাঈদের পরিবার
![]() এমএ মামুন: দেবহাটা উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কোঁড়া গ্রামের মৃত. শেখ মুনসুর আলীর ছেলে শেখ আবু সাঈদের বাড়িতে টানা ৮ বছর বাসা বাধে মৌমাছি। তার বাড়ির বেলকনিসহ বাড়ির চারপাশে ২৬টি বড় বড় মৌমাছির চাক রয়েছে। যা পুরো বাড়িটিকে ঘিরে রেখেছে মৌমাছির চাকে। যা দেখতে অন্যরকম লাগে। এলাকার মানুষের কাছে তাদের বাড়িটি এখন অনেক প্রিয় হয়ে উঠেছে। ঘের ব্যবসায়ী শেখ আবু সাঈদ বলেন, ৭ বছর আগে হঠাৎ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে ৭-৮টি মৌমাছির চাক এসে হাজির হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরই নির্দিষ্ট সময়ে মৌমাছির দলগুলো বাড়িতে চলে আসে। দ্বিতলাবিশিষ্ট বাড়ির বেলকনি, দেওয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে চাক তৈরি করে। প্রতি বছরই মৌমাছির দলের আগমনের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর এসেছে ২৬টি মৌমাছির দল। ৮ মাসে দুইবার মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করি। মধু ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করা মধু কিনে নিয়ে যায়। বছরে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মধু বিক্রি হয়। এ ছাড়া আত্মীয়-স্বজনরা নেয়। এলাকার বিভিন্ন মানুষ তাদের প্রয়োজনে খাঁটি মধু সংগ্রহ করে আমাদের কাছ থেকে। শেখ আবু সাঈদের স্ত্রী রনজিলা বেগম বলেন, মৌমাছিগুলো অনেক সৌখিন আর শৃঙ্খল প্রাণি। প্রথম দিকে কামড়ানোর ভয় পেলেও এখন আর ভয় লাগে না। মৌমাছি আমাদের কাউকে আক্রমণ করে না, কামড়ায় না। তিনি আরো বলেন, একবার কারা এসে বিষ স্প্রে করে। তাই অনেক পোকা মারা যায়। এসময় মরা ঝুঁড়ি ঝুঁড়ি পোকা ফেলে দেই। বাকি পোকারা উড়ে চলে যায়। তারপরের বছর আবারো সেই জায়গায় মৌমাছি এসে বাসা বাধে। এই চাকে আমাদের বাড়ির কোন কাজে সমস্যা হয় না। আমরা এই চাক থকে প্রতিবছর অনেক মধু পায়। সেই মধু নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিক্রি করি। এতে মোটামুটি ভালো লাভ হয়। স্থানীয় মধু সংগ্রহকারী ইসমাইল হোসেন জানান, মৌমাছি গাছের উচু ডালে কিংবা বাড়ির বেলকুনিতে বাসা করে। এরা অনেক শান্ত, তবে রেগে গেলে নিস্তার নেই। গ্রামের চাকের মধুতে হরেক রকমের ফুলের মধু থাকায় এটি বেশি কড়া। খেতেও অনে স্বাদ। আর মৌমাছি মৌসুমে আসে ফুলেল মধু আহরনের জন্য আবার জঙ্গলে চলে যায়। তবে এদের জায়গা পছন্দ হলে প্রতিবার একই স্থানে বাসা করে। দেবহাটা এলাকায় বহু বাড়িতে মৌমাছি চাক করে আছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন বলেন, মৌচাষ খুবই লাভ জনক। তবে যাদের বাড়িতে মৌমাছি বাসা করে তাদের একপ্রকার বিনা পরিশ্রমে বাড়তে আয়ের সুযোগ করে দেয়। তাছাড়া ছাদের ঝুলন্ত অংশে মৌচাক দেখতেও ভালো লাগে। সাঈদের বাড়িতে যে মৌচাক আছে তা আমি নিজেও অনেকবার গিয়ে দেখেছি। খুবই চমৎকার লাগে দেখতে। যদি কেউ মৌ প্রশিক্ষণ নিয়ে এ চাষ শুরু করে আমি মনে করি সে সফল হবেন। কারন মধু সব রোগের মহাঔষধ তাই এর চাহিদা ও দাম রয়েছে যথেষ্ট। বেকার সমস্যা সমাধানে এটি আলোর পথ দেখাবে। 6,222,903 total views, 966 views today |
|
|
|