Site icon suprovatsatkhira.com

আসন্ন ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে কালিগঞ্জে নির্বাচনি আমেজ

নিজস্ব প্রতিনিধি : মহামারি করোনা ভাইরাস শেষ হবে কবে তা এখনও অজানা বিশ্বজুড়ে। এর মধ্যে ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে কালিগঞ্জে দলীয় নেতা-কর্মী, সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচনি আমেজ শুরু হয়েছে। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। কে পাচ্ছে মনোনয়ন তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে লবিং গ্রæপিং শুরু করেছে। এমনকি দলের টিকিটের জন্য জড়িয়ে পড়ছে একে অপরের সমালোচনায়। অপর দিকে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কিছু কিছু প্রার্থীকে মাঠে দেখা গেলেও স্বতন্ত্র তেমন কোন প্রার্থীকে মাঠে দেখা যায়নি।
চেয়ারম্যান পদে বড় দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়নের জন্য আশায় বুক বেঁধেছেন অনেকে। মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার আগেই তারা দৌড়াচ্ছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রæতি।
সরেজমিন উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কালিগঞ্জের সদর কুশুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের ছোট ছেলে শেখ আবুল কাশেম মোহাম্মাদ আব্দুল্ল্যাহ। তিনি অনেক আগে থেকেই ভোটারদের কাছে গিয়ে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র, গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ করছেন। কুশুলিয়া ইউপি’র ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জানান, কুশুলিয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যোগ্য প্রার্থী প্রয়াত নেতা শেখ ওয়াহেদুজ্জামানের ছোট ছেলে শেখ আবুল কাশেম মোহাম্মাদ আব্দুল্ল্যাহ। সকলের কাছে অতি পরিচিত, যোগ্য, সৎ, নির্ভীক, সময়ের সাহসী সন্তান হিসেবে তিনি এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তিনি যদি নৌকা প্রতীক পান তাহলে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবে। তৃণমূলের কাছে কাশেম ব্যাপক জনপ্রিয় বলে জানান তিনি। এছাড়া কুশুলিয়া ইউপিতে নৌকা পাওয়ার আশায় রয়েছেন কাজী কাওফিল অরা সজল, নুরুজ্জামান জামু, সিরাজুল ইসলাম ইসালম। বিএনপি’র মনোনয়ন পাওয়ার আশায় কাজ করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ এবাদুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুজ্জামান। এছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান খান লতিফুর রহমান বাবলু।
মথুরেশপুর ইউপিতে নৌকা প্রতীক পাওয়ার প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিম। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করছেন মাঠ পর্যায়ে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান আব্দুল হাকিম অতীত ও ভবিষ্যৎ করণীয় প্রচারপত্র নিয়ে পুরো-দমে মাঠে-ময়দানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জনপ্রিয়তা যাচাই এর পাশাপাশি ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানারকম উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি। এছাড়া মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহেদ মারুফ, ফিরোজ কবির কাজল, ফিরোজ আহমেদ বাবু, শাহিনুর রহমান, ডা. রমেশ চন্দ্র। এই ইউনিয়নে বিএনপি-জোটের কোন প্রার্থীকে মাঠে দেখা যায়নি।
ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী হওয়ার প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মূখার্জী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. হাবিব ফেরদাউস শিমুল, বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী শওকাত হোসেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফিরোজ আলম।

কৃষ্ণনগর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোসলেম আলীর ছেলে সেলিম মাহমুদ। দলের জন্য ত্যাগী এই নেতাকে ২০১৩ সালে কালিগঞ্জের হাজাম পাড়ায় জামায়াতের নেতা কর্মীরা আটকিয়ে তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এছাড়া রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শ্যামলী রাণী, তপন রায়, মোস্তফা কবিরুজ্জামান মন্টু। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত কৃষ্ণনগর ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোর্শারফ হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান আকলিমা খাতুন লাকির কন্যা জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাফিয়া পারভীন। বিএনপি’র প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিউল্ল্যাহ বাহার।
বিষ্ণুপুর ইউপি’তে পুনরায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিয়াজ উদ্দিন। এছাড়াও রয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা ইফতেখারুল ইসলাম সুমন, মৃনাল কান্তি মন্ডল, ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম। বিএনপি’র প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম। চাম্পাফুল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক মোজাম দলীয় প্রতীক পেতে কাজ করছেন। একই সাথে দলীয় প্রতীক পাওয়ার জন্য লবিং গ্রæপিং করছেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোড়ল।
দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার সরকার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডি.এম সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ মোস্তফা সোহাগ, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন।
এছাড়াও বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম ও জুলফিকার রহমান।
নলতা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন পাড়, সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান সেলিম, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম তুফান, নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়।
তারালী ইউপিতে পুনরায় প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোসেন ছোট। এছাড়াও নৌকা পেতে মাঠে রয়েছেন প্রভাষক শফিকুজ্জামান খোকন। জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে আব্দুল গফুরও মাঠে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভাড়াশিমলা ইউপি’তে চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন উপজেলা যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান নাঈম, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে জড়িত রয়েছেন। ক্লিন ইমেজ খ্যাত নাঈম বেশ জনপ্রিয় বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও প্রার্থী হতে চান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা মাস্টার শফিকুল ইসলাম, আব্দুল কুদ্দুস সাহেব, আবু বক্কার রানা। বিএনপি’র প্রার্থী হতে মাঠে রয়েছেন সাবেক সংসদ শাহাদাৎ হোসেনের ছেলে আক্তারুজ্জামান বাপ্পি, বর্তমান চেয়ারম্যানের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
রতনপুর ইউপি’তে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমান চেয়ারম্যানের ছোট ভাই আলিম আল রাজী- টোকন। তিনি সকলের কাছে বেশ জনপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন। ইউনিয়নে তার বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া মাঠে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল হোসেন খোকন, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, শহিদুল ইসলাম ও যুবলীগ নেতা সেলিম হোসেন।
উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের জমে উঠেছে নির্বাচনি আমেজ। ওই ইউনিয়নে নৌকার মনোনয়ন পেতে মাঠে রয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর বড় ভাই সাবেক ছাত্রনেতা আশেক মেহেদী, তিনি মানুষের দ্বারে দ্বারে যেয়ে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্রচার সহ গণসংযোগও করছেন। এছাড়া প্রার্থী হতে চান বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাটুল, মাহবুবর রহমান সুমন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন। বিএনপি থেকে রয়েছেন আলমগীর হোসেন ও ফেরদাউস মোড়ল।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version