শ্যামনগর ব্যুরো : শ্যামনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদে বর্তমান উপাধ্যক্ষ জামায়াত নেতা ও নাশকতা মামলার আসামি আমির হোসেনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বনামধন্য এ মহাবিদ্যালয়ে জামায়াত নেতাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের পাঁয়তারার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বলছেন, পরিচালনা পর্ষদের আস্থাভাজন জামায়াত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। আওয়ামী লীগ নেতাসহ শিক্ষাবিদদের দাবি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন সরকারে থাকা অবস্থায় কোন জামায়াত নেতাকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ না দেওয়ার। এদিকে শুক্রবার (০৪ ডিসেম্বর) শ্যামনগর উপজেলার জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি স.ম কামরুল হায়দার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক এস এম জাকির হোসেন, যুগ্ম আহŸায়ক মো. শরীফুল ইসলাম সোহাগ, আল মামুন লিটন, আব্দুল মজিদ ও উপজেলা তাঁতী লীগের আহŸায়ক রেজওয়ানুল আজাদ নিপুন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী বিধায় শ্যামনগর আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয় এর অধ্যক্ষ পদে জামায়াত সমর্থক জনৈক আমির হোসেনকে নিয়োগ প্রদানে কলেজ কর্তৃপক্ষের তড়িঘড়ি প্রচেষ্টার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উল্লেখ্য, ০৫ই ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ এর নিয়োগ পরীক্ষার মহাপরিচালক প্রতিনিধি শ্যামনগর সরকারী মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ জনাব তন্ময় সাহা শারিরীক অসুস্থ থাকায় অপারগতা জানানো সত্তে¡ও নাশকতা মামলার আসামি জামায়াত সমর্থক আমির হোসেনকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ পরীক্ষা নির্ধারিত দিনে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ এ স্থানান্তর করা হয়েছে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্য জনক। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উক্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত পূর্বক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী যোগ্যতর প্রার্থীকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দানের জোর দাবি জানাচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলার আতরজান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার জন্য সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। বিগত ২০১৬ সালের ৩০ জুন অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী অবসরে যাওয়ার পর থেকে উপজেলার নারী শিক্ষায় গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখা এ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে শূন্য পদের বিপরীতে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পরিচালনা পর্ষদের প্রিয়ভাজন জামায়াতের রাজনীতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত বর্তমান উপাধ্যক্ষ আমির হোসেনকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে একটি মহল। এর আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে উপাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা মেনে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ আমির হোসেনকে চাকুরীচুত করে। তৎকালীন জামায়াত দলীয় সাংসদসহ জামায়াত নেতা মাও. আব্দুল বারীর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে সর্বমহলে বিশেষ পরিচিতি তিনি। আমির হোসেন শুরু থেকে জামায়াত এর রাজনীতির সাথে যুক্ত। কৌশলী আমির হোসেন পদ-পদবী না নিলেও স্বাধীনতা বিরোধী ওই সংগঠনের নীতি নির্ধারকদের একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বলে জানায় একাধিক সূত্র। এছাড়া জামায়াত দলীয় সাবেক সাংসদ গাজী নজরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে স্পষ্টত বিধির লঙ্ঘন ঘটিয়ে ২০০২ সাল থেকে পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিনি নিয়মিত অংশ গ্রহণ করতেন। আমির হোসেন জামায়াত এর প্রোডাক্ট -উল্লেখ করে নওয়াবেঁকী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জুলফিকার আল মেহেদী বলেন, সে জামায়াত এর রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। ২০০৩ সালের ২৪ অক্টোবর দৈনিক কাফেলা পত্রিকায় তাদের রাজনীতির প্রতি আস্থাশীল শিক্ষকদের সাথে জামায়াত ইসলামীর একটি সভা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তিনি জামায়াতের সাংগঠনিক কর্মকান্ডে অন্যতম অর্থ যোগানদাতা। আ’লীগ নেতা আ ক ম মিজানুর রহমানকে নিয়োগ বঞ্চিত করা হয় শুধুমাত্র জামায়াত নেতা আমির হোসেনকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য। আমির হোসেনকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করা হলে দেশবিরোধী চর্চা চলবে ওই প্রতিষ্ঠানে। এ বিষয়ে উপাধ্যক্ষ আমির হোসেন জানান, জামায়াতকে আর সমর্থন করিনা, মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরিচালনা পর্ষদকে ম্যানেজ করা বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমি আমার যোগ্যতা বলে এ পদের জন্য আবেদন করেছি।
আতরজান মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ পদে জামায়াত নেতাকে নিয়োগ দেওয়ার পাঁয়তারার অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/