Site icon suprovatsatkhira.com

হাতি নয়, সন্তান নিয়ে রাস্তায় নেমেছি

শুভ হালদার: ভাই টুনটুনিকে ভিক্ষা দিন। টুনটুনি নাম শুনলে যে করোই মনে হবে ছোট আকৃতির পশুপাখি হবে হয়তো। কিন্তু না। ইয়া বড় আকৃতির হাতির নাম টুনটুনি। টুনটুনির বয়স ১০ বছর । টুনটুনির মালিক কমলা সার্কাস। টুনটুনি নামের হাতিটির (পরিচালনা কারি) মামুদের নাম মিরাজ হোসেন (২৬)।
হাতি নিয়ে মিরাজ গত দুই দিন ধরে সাতক্ষীরার ছোটবড় হাট বাজারে ভিক্ষা করছে। রাস্তার ধারে রং চং করা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে গৃহকর্তাকে হেকে ডেকে বলছে ভাই আমার টুনটুনিকে ভিক্ষা দেন।
শনিবার বেলা ১১ টা। কাঠ ফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমের মধ্যে সদর উপজেলার পরানদাহ বাজার ও রাস্তায় টুনটুনিকে ভিক্ষা করতে দেখা গেল। ভিক্ষার ধরনও একটু আলাদা।
হাতি শুড় উঠচু করে ছালাম দিচ্ছে সাথে মামুদও ছালাম দিতে ভুল করছে না। কেউ তাকে টাকা পয়সা দিচ্ছে, কেউ দিচ্ছে না। তাতে মান অভিমান আপত্তি নেই মামুদের। যাচ্ছে অন্য দোকানে। আবারও ছালাম বিনিময়।
পথচারির রাস্তা আটকিয়ে বিরক্ত করতেও দেখা গেল না।
বাসা বাড়ি দোকান পাটে অভিনব কায়দায় একধরনের ভিক্ষা করার কারন জানতে চাইলে মামুদ মিরাজ হোসেন জানায়, এটা হাতি নয় স্যার। সার্কাসের টুনটুনি। এ আমার সন্তান। করনায় সব বন্ধ হয়ে গেছে তাই সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আমি জানি, প্যান্ডেলের বাইরে হাতি বের করা নিষেধ। আপনি এখন ছবি তুলে ফেসবুকে দেবেন পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যাবে। আমার সন্তান (টুনটুনি) অভূক্ত থাকবে। খাওয়া হবে না তার, সাথে আমারও। ভীষন ক্ষতি হয়ে যাবে স্যার। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয় মিরাজ। মিরাজ হতাশার নিশ^াস ছেড়ে জানায়, টুনটুনির প্রধান খাদ্য কচি গলাগাছ। তাও এখন ফ্রিতে পাওয়া যায় না। এছাড়া প্রতিদিন ১৫ কেজি ভূসি লাগে টুনটুনির। যার মুল্য ৫৩০ টাকা। সারাদিন রাস্তা থেকে উপার্জন হয় প্রায় হাজার টাকা। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চলে (আমার) মিরাজের। গত তিন দিন আগে বরগুনা থেকে মিরাজ তার টুনটনিকে নিয়ে সাতক্ষীরা এসেছে। রাত কাটিয়েছে পরানদহ বাজারের পাশে ঝোপের মধ্যে। করোনায় পেশা বদলে দেয়া মিরাজের সরল জবাব, করোনাকালে টুনটুনিকে সাথে নিয়ে এ রাস্তা বন্ধ হলে পাড়ি দেবে অন্য রাস্তায়, অন্যকোনখানে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version