Site icon suprovatsatkhira.com

স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আমরা সবাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সফলতার পেছনে ছুটে চলেছি। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে, সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে মানুষ হিসেবে আমাদের চেষ্টার কোন অন্ত নেই। স্কুল, কলেজ, কোচিং, সংস্থা, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ যেকোনো কর্মক্ষেত্রে মানুষ একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে চলেছে। সাফল্য পাওয়ার জন্য আমরা আমাদের প্রচেষ্টার তুলনায় প্রায়শই বেশি কিছু আশা করি এবং খুব দ্রæত সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে চাই। মানুষের এই সাফল্য ক্ষুধা মানুষের সভ্যতা বিকাশে সহায়তা করেছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়। জীবনে সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও আসতে পারে, সেক্ষেত্রে দমে গেলে হবে না। বরং নতুন উদ্যমে আবারও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, কারণ ব্যর্থতাই সফলতার চাবিকাঠি বলে মন্তব্য করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল। বুধবার (২৮ অক্টোবর) সকালে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে ‘কৈশোর পুষ্টি নিশ্চিত করি, কৈশোর বান্ধব বাংলাদেশ গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ হলো একটি স্বর্ণের খনি! এদেশের মানুষের যেমন আছে সবুজের অহংকার, তেমনি আছে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো উদ্দামতা। আজকের এই স্বর্ণ কিশোর-কিশোরীরা সবুজের অহংকার আর ঢেউয়ের উদ্দামতার সমন্বয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেদের যোগ্য করে তুলবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আর এই স্বর্ণ কিশোর – কিশোরী প্রজন্মই একদিন নির্মাণ করবে সৃজন, মনন ও মেধাবী বাংলাদেশ’। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ দেশ গড়ার যে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছেন তার জন্য প্রয়োজন সোনার মানুষ। আজকের এই আয়োজনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরাই হলো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার কারিগর। যাদের হাত ধরে এই দেশ একদিন সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এই স্বর্ণ কিশোর, কিশোরীরাই হবে এক একজন সোনার বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের খুলনার বিভাগীয় প্রধান ও ফাউন্ডেশন ডে উদযাপনের সভাপতি স্বর্ণ কিশোরী প্রজ্ঞা পারমিতা রহমান। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন সারা দেশে কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, বাল্য বিয়ে, প্রজনন স্বাস্থ্য, গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতায় কাজ করে থাকে। করোনার সময় কিশোরীরা অনেকটা স্বাস্থ্য সচেতন-হীনতায় ভুগছে। তাই কিশোরীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে ও কিশোরীদের সুরক্ষার জন্য স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন সব সময় পাশে আছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, স্বর্ণ কিশোরী একদল বদলে যাওয়া এবং বদলে দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর আলোকিত কিশোরীর সংগঠন। যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়াজ তোলে, বাল্য বিবাহ রোধে তাদের কণ্ঠ উঁচু হয় এবং একই সাথে তারা কিশোরী স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে আত্মপ্রত্যয়ী ভূমিকা রেখে চলেছে। আমাদের এই কিশোরী বন্ধুরা ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী তাদের আগমনি বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে এবং তারা দেখিয়েছে তারা আলো ছড়ানোর জন্য প্রস্তুত। ২০৪১ সালের মধ্যে কিশোরী পুষ্টি নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি সুস্থ ও বলিষ্ঠ জাতি গঠনে কাজ করছে স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন বলে জানান তিনি। এসময় নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল অতিথিসহ শিক্ষার্থীদের স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের প্রচলিত চারটি শপথ বাক্য ‘১. ১৮ বছরের আগে বিয়ে নয়, ২. ২০ বছরের আগে গর্ভ ধারণ নয়, ৩. ভাই আর বোন পুষ্টিকর খাবারে সমান দুই জন ও ৪. বয়স ১৫ বছর যখন টিটি টিকা পাঁচ ডোজের শুরু তখন’ এর শপথ বাক্য পাঠ করান স্বর্ণ কিশোরী প্রজ্ঞা পারমিতা রহমান। এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এনডিসি আজহার আলী। সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলার স্বর্ণ কিশোরী মারজান বিনতে আমিনুল্লাহ ও স্বর্ণ কিশোর আজিম খান। এ সময় জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের স্বর্ণ কিশোর, কিশোরীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরবর্তী স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা ও পরবর্তীতে সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করা হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version