Site icon suprovatsatkhira.com

মেয়েকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় দেবহাটায় বৃদ্ধ বাবাসহ আহত-৫

দেবহাটা প্রতিনিধি : বিবাহিতা মেয়ের ওপর শ্বশুর বাড়ির লোকজনের চলমান নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মারপিট ও ধারালো দায়ের কোপে গুরুতর আহত হয়েছে ওই গৃহবধূ এবং তার অসহায় বাবা-ভাইসহ ৫ জন। আহতরা হলেন, দেবহাটার চারকুনি গ্রামের মৃত কালু শেখের ছেলে রমজান শেখ (৭০), তার দুই ছেলে আল আমিন (৩০), আলাউদ্দীন (২৮), মেয়ে মনজিলা খাতুন (৩৩) ও জামাতা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের গয়েশপুর কুলআটি গ্রামের সরোয়ার হোসেনের ছেলে কামাল হোসেন (৩৫)। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুলআটি গ্রামে মনজিলা খাতুনের শ্বশুর বাড়িতে মারপিটের এ ঘটনা ঘটে। মারপিট পরবর্তী রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আহতদেরকে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রেফার করলে রাতেই তাদেরকে সেখানে স্থানান্তর করা হয়।
আহত মনজিলা খাতুনের বৃদ্ধ বাবা রমজান শেখ (৭০) জানান, কয়েক বছর আগের সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের গয়েশপুর কুলআটি গ্রামের সরোয়ার হোসেনের ছেলে কামাল হোসেনের সাথে তার মেয়ে মনজিলা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে মেয়ের তিন ভাসুর আল আমিন, শাহিনুর, আলমগীর এবং তাদের স্ত্রীসহ দেবর আমিরুল বিভিন্ন সময়ে তার মেয়ে মনজিলা খাতুনকে মারপিট করতো। এমনকি মনজিলা খাতুনের স্বামী কামাল হোসেন তার স্ত্রীকে মারপিটের প্রতিবাদ করতে গেলে তার ভাই ভাবীরা মিলে তাকেও মারপিট করতো।
শুক্রবার সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাসুর আল আমিন আবারও মনজিলা খাতুনকে বেদম মারপিট করে। মারপিটের ঘটনা জানতে পেরে সন্ধ্যায় মনজিলা খাতুনের বৃদ্ধ বাবা রমজান শেখ ও দুই ভাই আলাউদ্দীন শেখ এবং আল আমিন শেখ কুলআটি গ্রামে তার শ্বশুর বাড়িতে যায়। সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয়দের কাছে শোনা বোঝা শেষে ভাসুর আল আমিন হোসেনের কাছে তার মেয়ে মনজিলাকে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ের তিন ভাসুর আল আমিন হোসেন, শাহিনুর ও আলমগীর, আল আমিনের স্ত্রী রোখসানা, শাহিনুরের স্ত্রী সায়েরা ও ছেলে আব্দুর রহমান, আলমগীরের ছেলে আবীর হোসেন ও দেবর আমিরুল মিলে লাঠি-শোঠা ও ধারালো দা দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে তাদেরকে বাঁচাতে মেয়ে মনজিলা ও জামাতা কামাল এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে তারা।
পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে আহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা জানান, ‘অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version