অক্টোবর ৫, ২০২০
কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধাভোগী যাচাই-বাছাইয়ে অনিয়মের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি: বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন বরাদ্দের জন্য সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কালিগঞ্জে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছেন কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। লিখিত অভিযোগ ও বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত ২৫ ফেব্রæয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন শাখার ৪৮.০০.০০০০.০০৫.১৬.০০২.২০-৩৩ নং স্মারকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলায় তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে আবাসন সুবিধাভোগী নির্বাচনের উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেল এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন। ৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অন্যান্যরা হলেন, যথাক্রমে সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মনোনীত প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রসুল, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্যের মনোনীত প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক মনোনীত (মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বীকৃত) বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির আহমেদ ও উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন। ওই কমিটি কালিগঞ্জ উপজেলায় তালিকাভুক্ত ৪শ’ ১৭ জন ভাতা-ভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে আবাসন সুবিধাভোগী নির্বাচন করে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছেন। আবেদনকারীর মধ্য থেকে নির্বাচিত ২৫ জনের ওই তালিকা ৫ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে তালিকা প্রকাশের আগে থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সরেজমিন যাচাই না করে ঘরে বসে মনগড়া তালিকা প্রস্তুত করার কারণে ওই তালিকায় প্রকৃত দুস্থদের পরিবর্তে কয়েকজন স্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার নাম ঠাঁই পেয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। প্রকাশিত তালিকা দেখার পরও একই অভিমত ব্যক্ত করেন ওইসকল মুক্তিযোদ্ধারা। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুদলী গ্রামের মৃত মোকছেদ আলী গাজীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলী গাজী, দেয়া গ্রামের মৃত নবের আলী গাজীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, মৃত এলেম সরদারের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান, কুশুলিয়া ইউনিয়নের কুশুলিয়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর রাশেদ আলী, ভদ্রখালী গ্রামের মৃত সামালী সরদারের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমান, মৃত মনোহর সরদারের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দীন সরদার জানান, অর্থনৈতিক বিবেচনায় তারা ঘর পাওয়ার যোগ্য। ১৬ লাখ টাকার ওই আবাসন সুযোগ প্রাপ্তির জন্য ১৩১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করেছেন। অথচ যাচাই-বাছাই কমিটি তাদের অবস্থা মূল্যায়ন না করে অনেক স্বচ্ছল ব্যক্তিকে আবাসন সুবিধার জন্য মনোনীত করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার নিকটও জানানো হয়েছে। তবে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিয়ে নানা প্রকার লুকোচুরিসহ অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। তারা আরও বলেন, তালিকা তৈরিতে অস্বচ্ছতার বিষয়টি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল্লা আল মামুন জানান, যাচাই-বাছাই কমিটি সরকারি নীতিমালা মেনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থিক অস্বচ্ছলতার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করেছেন। ২৫ জনের তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে টানানো হয়েছে। কারও আপত্তি থাকলে ৬ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল করতে পারবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, আবাসন সুবিধার তালিকা দেখে যদি কোন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনে করেন যে তিনি বঞ্চিত হয়েছেন তাহলে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করতে পারবেন। 8,956,118 total views, 11,868 views today |
|
|
|