ডেস্ক রিপোর্ট : আশাশুনি উপজেলার চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা শরবত আলী হত্যা মামলার প্রধান আসামি খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১২টায় উপজেলার গদাইপুর বাজারে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শত শত নারী-পুরুষ হাতে হাত ধরে প্লাকার্ড নিয়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। এ সময় খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুস মোল্যার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রভাষক জাকিরুল ইসলাম, অ্যাড. প্রিন্স, ওহিদুল ইসলাম মোল্যা, নিহতের স্ত্রী শিফালী বেগম, ছেলে শিমুল, সবুজ, এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক বাবুরাম মন্ডল প্রমুখ। বক্তারা এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা শরবত হত্যা কান্ডের প্রধান আসামি খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ফাঁসি দাবি করেন। বক্তারা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম এলাকার একজন চিহ্নিত কুখ্যাত সন্ত্রাসী, খুনি ও ধর্ষক। তার বাবা মোজাহার উদ্দিন ছিল একজন যুদ্ধাপরাধী। আওয়ামী লীগ নেতা শরবত আলী হত্যার আগেও রাজাকার পুত্র ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের বিরুদ্ধে এর আগে গোপালগঞ্জের মেয়ে যাত্রাপালার নায়িকা টুম্পাকে নির্যাতন চালিয়ে নৃশংস ভাবে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে তাকে হত্যা করে। সন্ত্রাসী খুনি ডালিমের বিচার না হলে এলাকায় আরও ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সংগঠিত হতে পারে বলে বক্তারা শঙ্কা প্রকাশ করেন। জেলহাজতে আটক ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমকে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন সে জন্য আদালতের বিজ্ঞ বিচারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বক্তারা।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল গদাইপুর বিলে মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরের দু’কর্মচারীকে বেঁধে রেখে মাছ লুটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে ক্ষুব্ধ হন গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম। পরবর্তীতে ডালিমের দু’ভাই ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ৯ এপ্রিল একই গ্রাম গদাইপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবত মোল্লা মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরে লুট-পাট চালায়। ১০ এপ্রিল সকালে ওই মাছ গদাইপুর মাছের সেটে বিক্রি করতে গেলে শরবত মোল্লার সঙ্গে বাক-বিতন্ডা ও হাতা-হাতি হয়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ডালিম তার ভাই টগরের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবত মোল্লার বাড়িতে হামলা চালায়। শরবত মোল্লাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে শরবত আলীসহ তার স্ত্রী শেফালি খাতুন ৫ থেকে ৬ রক্তাক্ত জখম হয়। ভাঙচুর করা হয় ৫টি বাড়ি। আহত শরবতকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত শরবতের ছেলে সবুজ বাদী হয়ে ১১ এপ্রিল আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমকে প্রধান আসামি করে ৫৭ জনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম নিজেকে আত্মগোপন করে ঢাকায় বসবাস শুরু করে। ২৮ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঢাকার খিলখেত থানা এলাকার নিজস্ব একটি ফ্লাট থেকে তাকে গ্রেফতার করে।