অক্টোবর ৪, ২০২০
মৃত্যুর এক যুগ পরেও পেনশন সুবিধা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ কর্মকর্তা যতীন্দ্রনাথের পরিবার
ডেস্ক রিপোর্ট : একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের মৃত্যুর পর ১২ বছর পার হলেও তার পরিবার এখন পর্যন্ত পেনশনের টাকা সহ কোন সুযোগ সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত মামলায় অনুক‚ল রায় পেয়ে যতীন্দ্রনাথ পোদ্দারের স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার এরই মধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেনদরবার করেও তার শেষ নামাতে পারেননি। বর্তমানে মানবেতর অবস্থায় তারা সাতক্ষীরা শহরেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ শেষে ১৯৭২ সালের ৫ জুলাই বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে এসআই পদে যোগদান করেন। ১৯৯০ এর ২৯ এপ্রিল পদোন্নতি পেয়ে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে চুয়াডাঙা জেলায় কর্মরত থাকেন। এর এক পর্যায়ে তিনি ও তার পরিবার সাতক্ষীরা শহরে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। স্ত্রী মমতা রানী পোদ্দার জানান, চাকুরিকালীন তার স্বামীকে বিভিন্ন সময় ‘গোপালগঞ্জের লোক এবং তিনি হিন্দু’ হিসাবে অনেকের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। এরই এক পর্যায়ে ২০০৬ সালের ২ মার্চ চাকুরির বয়স সীমা ২৫ বছর পূর্ণ হবার ৩ বছর আগে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে দীর্ঘ চাকুরি জীবনে কোন ধরনের লঘুদন্ড বা কারাদন্ডের অভিযোগ ছিল না। তিনি দীর্ঘদিন সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। যতীন্দ্রনাথ তাকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি পূর্ণ বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দেন দরবার করে কোনো সুফল না পেয়ে খুলনায় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন (মামলা নম্বর-৬/২০০৬)। ট্রাইব্যুনাল তার পক্ষে ২০০৭ এর ২২ নভেম্বর প্রদত্ত রায়ে অবসরে পাঠানো আইন সম্মত হয়নি উল্লেখ করে তাকে চাকুরিতে পুনঃ-বহাল এবং বিধি মোতাবেক তার চাকুরির সমস্ত সুযোগ সুবিধা প্রদানের আদেশ প্রদান করেন। আদালত রায়ে উল্লেখ করেন যে প্রতিহিংসা মূলকভাবে তাকে চাকুরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। যা যুক্তিযুক্ত ও আইনসংগত ছিল না। এরই মধ্যে ২০০৮ সালের ১৬ আগস্ট যতীন্দ্রনাথ পোদ্দার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মমতা রানী পোদ্দার তার আবেদনে আরও উল্লেখ করেন যে সরকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিপক্ষে আপিল করেন (নম্বর ০৯/০৮)। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ওই আপিল খারিজ করে আগের রায় বহাল রাখেন। এদিকে পুনরায় সরকারপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল (নম্বর ১১৬৩/১২) করলে তাও ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খারিজ হয়ে যায়। ফলে আদালতের আগের আদেশসমূহ বহাল থাকে। মমতা রানী পোদ্দার আরও জানান এ ঘটনার পর আরও সাত বছর পার হলেও তিনি স্বামীর ওয়ারেশ হিসাবে পেনশনের টাকা এবং অন্যান্য কোন আর্থিক সুবিধা পাননি। এসব রায় নিয়ে তিনি সরকারের কাছে বারবার দেনদরবার করেছেন। বর্তমানে তিনি স্বামী হারা হয়ে বেকার সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অবিলম্বে তিনি তার স্বামীর চাকুরিকালীন বেতনভাতা, পেনশন ও সরকারী কর্মচারীর স্ত্রী হিসাবে প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা প্রদানের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ 8,957,767 total views, 13,517 views today |
|
|
|