কলারোয়া প্রতিনিধি : কলারোয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ঘুষ লেনদেনের ভিডিও ধারণ করায় ক্ষেপেছেন অফিসের দলিল লেখকরা। তারা গত দুই দিন ধরে স্থানীয় সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। মিথ্যা মালায় হয়রানি করারও চক্রান্ত করছে তারা। জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে অনুগত দালালের দৌরাত্ম্যে, জমির শ্রেণি পরিবর্তনের নামে রাজস্ব ফাঁকি আসছে কলারোয়া রেজিস্ট্রি অফিস। সাব-রেজিস্ট্রার সাহিদুর রহমানের বদলি অর্ডার হওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার তাঁর শেষ অফিসজনিত কারণে রেজিস্ট্রেশনের নামে অবৈধভাবে বিভিন্ন ফি আদায়সহ অজ অভিযোগের সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে যেয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় প্রকাশ্য টাকা লেনদেনের ছবি ভিডিও ধারণ করা হয়। অবৈধ টাকা লেনদেনের বিষয়ে সাব-রেজিস্ট্রার সাহিদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি খাস কামরায় যেয়ে কথা বলবেন বলে আমাদেরকে বাহিরে অপেক্ষা করতে বলেন। এ সময় সাংবাদিকদেরকে বসিয়ে রেখে তিনি দলিল রেজিস্ট্রি না করে সাংবাদিকদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। তথ্য সংগ্রহের সময় স্থানীয় দালাল চক্রের তোপের মুখে পড়েন সংবাদ কর্মীরা। এ সময় কলারোয়া থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে সাংবাদিকদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কলারোয়া থানায় মির্জাপুর গ্রামের জয়নুদ্দিনের ছেলে সন্ত্রাসী, দালাল, ইভটিজিং মামলার সাজাভোগ কারী আসামি সুমন হোসেন, দালাল আলমগীর মাস্টারসহ অজ্ঞাত কিছু দালালদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।সরকারি ফি’র বাইরে ঘুষ না দিলে কোনো কাজ হয় না সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যেয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। দলিলের নকল তুলতে সরকারি ফি ২৭০ টাকার বিপরীতে সেবা গ্রহীতাদের গুনতে হয় দেড় হাজার টাকা। সরকারি ফি’র বাইরে পুরো টাকাই যায় সাব-রেজিস্ট্রার মো: সাহিদুর রহমানের পকেটে। কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের নকল নবীশ আবুল খায়ের ও মহাসিন এই ঘুষের টাকার লেনদেন করেন। সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, কোবলা দলিল করতে ব্যাংক চালানের পরও অতিরিক্ত লাখে এক হাজার টাকা হারে দিতে হয় সাব-রেজিস্ট্রারকে ও লাখে এক হাজার টাকা হারে দিতে হয় দলিল লেখক সমিতির নামে। সেবা ও গ্রহীতার মূল ভোটার আই.ডি কার্ড না থাকলে ১০০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। এস.এ এবং বি.এস খতিয়ান যদি তহসিল অফিসের হয় তাহলে সাব-রেজিস্ট্রারকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। যদিও তহসিল অফিসের এসব খতিয়ান দিয়ে দলিল না করতে প্রজ্ঞাপন জারি রয়েছে। এছাড়া দলিলের মূল কপি ছাড়া দলিল করতে গ্রাহক ফটোকপি নিয়ে আসলে সাব-রেজিস্ট্রারকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে জানা গেছে।
দলিল লেখকের সঙ্গে সাব-রেজিস্ট্রারের খাস কামরার দরজা বন্ধ করে প্রতিজনের সঙ্গে আলাদাভাবে প্রতিটি দলিলের জন্য আলাদা আলাদা চুক্তি করতে হয়। খায়েরকে দিয়ে দলিল লেখকদের সঙ্গে টাকা লেনদেন করেন সাব-রেজিস্ট্রার। এ বিষয়ে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী জেরিন কান্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান উপযুক্ত প্রমাণ পেলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কলারোয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/