কাদের মহিউদ্দীন : দেবহাটা উপজেলায় চাষ উপযোগী মাটি ও লাভজনক হওয়ায় ড্রাগন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে অনেক চাষি। উচ্চ ফলনশীল, ঔষধী পুষ্টি-গুন সম্পন্ন ফল হিসেবে ড্রাগন ফল চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই উপজেলায়। দেবহাটায় ড্রাগন চাষ করে কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন বলে জানা যায়। মাঝ পারুলিয়া গ্রামের মৃত জবেদ আলীর মোল্লার পুত্র ড্রাগন চাষি মহর আলী মোল্লা(৩৮) তিনি তার চাষ করা ড্রাগন বাগান থেকে ফল বিক্রি করে অধিক লাভবান হচ্ছেন বলে জানান। তিনি তার ১০ কাটা জমির উপর ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। তিনি স্থানীয় কৃষক আবু সাঈদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করেন।
দেবহাটা উপজেলার টাউনশ্রীপুরের অপর এক কৃষক সৈয়দ আকবর আলী ‘সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র এ প্রতিনিধিকে জানান, ড্রাগনের বিষয়ে তেমন ধারণা না থাকায় প্রথমে ধান, পাট, সরিষার চাষ করেছেন। তারপরে পোকা-মাকড় রোগ বালাইয়ের কারণে এসব ফসল চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েন। পরে দেবহাটা উপজেলা কৃষি বিভাগের একজন মাঠ কর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কুমিল্লা অঞ্চলের ভালুকা থেকে ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করেন এবং ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সাল হতে এক শত টাকা মূল্যে শতাধিক ড্রাগন চারা এবং সিমেন্টের পিলার দিয়ে বাগান তৈরি করেন এবং গাছগুলির শাখা প্রসারিত হওয়ার জন্য মোটরসাইকেলের পুরাতন টায়ার দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করেন।
চাষিরা আরো বলেন এ গাছে ফল আসতে ১৮ থেকে ১৯ মাস সময় লাগে। সন্ধ্যারাতে এ গাছে সাদা রঙের ফুল ফোটে, আবার ভোররাতে ফুলগুলি মাতিয়ে যায়। মে মাসে ফুল ফোটে এবং জুন মাসে ফল পাকতে শুরু করে। একবার ফল ধরলে একাধারে ৬-৭ বছর ফল দেয়। প্রতি কেজি ফলের মূল্য ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকায় পাইকার ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে নিয়ে যান। চাষিরা বলেন, ড্রাগন ফল বিদেশি ফল, চায়না, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় এ ফল ব্যাপক ভাবে চাষ হয়। আমাদের দেশে ড্রাগন চাষ ব্যাপক জনপ্রিয় না হলেও এলাকার চাষিরা লাভজনক হওয়ায় ড্রাগন চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। যদি কৃষকদের কৃষি অফিস থেকে বীজ, চাষ পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহযোগিতা করলে এলাকার কৃষকরা ড্রাগন চাষের প্রতি আরো বেশি বেশি ঝুঁকে পড়বেন এমনটায় প্রত্যাশা এলাকার কৃষকদের।