তালা প্রতিনিধি : ঘেরের জমির হারির টাকা না দিয়ে জোরপূর্বক মৎস্য ঘের করে আসছিলেন সরদার ফিরোজ আহম্মেদ। তার কাছে হারির টাকা চাইতে গেলেও নানাভাবে হয়রানি করতেন জমির মালিকদের। এমনকি বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দিতেন। পরে জমির মালিকরা একত্রিত হয়ে স্বেচ্ছায় তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমানকে পাঁচ বছরের জন্য রেজিস্ট্রি দলিল করে নলবুনিয়া ঘের ডিড করে দেন। তখন থেকে সরদার মশিয়ার রহমান শান্তিপূর্নভাবে ঘের পরিচালনা করে আসছেন। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে তালা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন উপজেলার জেয়ালা নলতা গ্রামের নলবুনিয়া মৎস্য ঘেরের জমির মালিকদের পক্ষ থেকে এসব কথা তুলে ধরেছেন আটারই গ্রামের সরদার বায়তুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, সম্প্রতি জেয়ালা নলতা গ্রামের লুৎফর নিকারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি মহল তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার মশিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ১২০ বিঘা মৎস্য ঘের দখলের অভিযোগ আনে একটি মহল। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি সরদার মশিয়ার রহমানের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টা মাত্র। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার ফিরোজ আহম্মেদ জমির মালিকদের হারির টাকা না দিয়ে জোরপূর্বক নলবুনিয়া মৎস্য ঘেরটি করছিলেন। জমির মালিকরা ঘেরের হারির টাকা চাইতে গেলে ক্ষমতা অপব্যবহার করে নানাভাবে হয়রানিসহ কয়েক জনকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকিও দিয়েছিলেন সরদার ফিরোজ আহম্মেদ। শুধু তিনি নয়, তার ঘেরের ম্যানেজার রবিউল গাজী সরদার ফিরোজ আহম্মেদ’র পক্ষ নিয়ে নানাভাবে জমির মালিকদের হয়রানি করতো।
এ সময় তিনি আরও জানান, নলবুনিয়া ঘেরের জমিই তাদের একমাত্র সম্বল। কিন্তু হারির টাকা না পাওয়ায় কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে তাদের। আজও পূর্বের ঘের মালিক সরদার ফিরোজ আহম্মেদের কাছ থেকে হারির টাকা বুঝে পাননি অনেকেই। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ২০১৯ সালের ২৭ জুন জমির মালিকরা সরদার মশিয়ারকে পাঁচ বছরের জন্য রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। সেই থেকে তিনি সুষ্ঠুভাবে হারির টাকা পরিশোধ করে মৎস্য ঘের পরিচালনা করে আসছেন সরদার মশিয়ার রহমান। সম্প্রতি লুৎফর নিকারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তালা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মশিয়ার রহমানকে অবৈধ দখলদার, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ নানাবিধ অভিযোগ এনে বিভিন্ন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সরদার মশিয়ার রহমান ঘের দখল কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নয়।
রাজনীতি থেকে সরাতে একটি মহল এসব ষড়যন্ত্র করছে। পূর্বের জবরদখলকারী ঘের মালিক সরদার ফিরোজ আহমেদ নানাভাবে সরদার মশিয়ারকে নিয়ে হয়রানির পাশাপাশি অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। এসব ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ঘেরের জমির মালিকেরা। এ সময় পূর্বের ঘের মালিক সরদার ফিরোজ আহম্মদের কাছে পাওনা হারির টাকার পেতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার ফিরোজ আহম্মেদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেন নলবুনিয়া মৎস্য ঘেরে জমির মালিক হাজরাকাটি গ্রামের আব্দুল ছাত্তার সরদার, হাবিবুর রহমান সরদার, সেকেন্দার আবু জাফর বাবু, আটরই গ্রামের মতলেব শেখ, রফিকুল ইসলাম, মাসুম সরদার, ওবায়দুল সরদার, মিজানুর রহমানসহ অর্ধ-শতাধিক জমির মালিক।
