Site icon suprovatsatkhira.com

ঝাউডাঙ্গায় শিশুখাদ্য ও বেকারি পণ্য তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল

স্টাফ রিপোর্টার : সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গায় বিভিন্ন বেকারিতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নি¤œ মানের বেকারি পণ্য এবং বিভিন্ন ধরনের শিশুখাদ্য। স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি না থাকায় দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব নি¤œ মানের বেকারির দোকান ও কারখানা। এদিকে এসব বেকারিগুলি বিএসটিআই অনুমোদন না থাকায় প্রতি মাসে সরকার কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একদিকে নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা অন্যদিকে নি¤œ মানের খাদ্য দ্রব্য বিক্রি করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বেকারি মালিকরা। যদিও স্থানীয় সচেতন মহলের প্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনুমোদনহীন এসব নি¤œ মানের বেকারি পণ্য তৈরি নিষিদ্ধ ও অবৈধ দোকান বন্দের জন্য জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আজ পর্যন্ত সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তারা জানান, অবিলম্বে এসব অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ না হলে এলাকার জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়তে পারে। সরেজমিনে ঝাউডাঙ্গার সাতক্ষীরা ফুডস বেকারিসহ কয়েকটি বেকারি ঘুরে দেখা গেছে, বেকারির উৎপাদিত পণ্যের মান নির্ধারণের জন্য সরকারের বিএসটিআই অনুমোদন নেয়ার নিয়ম থাকলেও কোন বেকারির বিএসটিআই অনুমোদন নেই। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নি¤œমানের আটা-ময়দা দিয়ে কেক, বিস্কুট, রুটি, মিষ্টি, লাড্ডু, শিশু খাদ্যসহ বিভিন্ন বেকারি পণ্য তৈরি হচ্ছে। মানা হচ্ছে না বিএসটিআই নীতি-মালা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বেকারি শ্রমিক জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরিসহ মুখরোচক খাবার তৈরির জন্য ময়দার সাথে বিষাক্ত রাসায়নিক পাউডার মিশানো হয়। এছাড়া কারখানার শ্রমিকদের নির্দিষ্ট কোন পোশাক না থাকায় অনেকের শরীর থেকে ঘাম ঝরে তৈরিকৃত খাদ্যের উপর পড়ে। আবার অনেক শ্রমিক ধূমপানরত অবস্থায় খাদ্য তৈরির কাজ করেন। তিনি আরো জানান, তেল-ভর্তি ড্রাম ও তেলের পাত্র খুলে রাখায় তার উপরে মাছিসহ বিভিন্ন পোকা তেলের উপর বসে থাকে। এছাড়া আটা-ময়দার বস্তা গুলিতে ইঁদুর ও তেলাপোকা ঘোরাঘুরি করে। তবে মালিকদের এসব বিষয়ে তারা মুখবন্ধ করে কাজ করার জন্য বলেন তা নাহলে চাকরি থাকবে না বলেও হুমকি দেন বলে জানান এই শ্রমিক। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ্যে উল্লেখ করা হয় না। যদিও পণ্যের মোড়কে নাম স্পষ্ট করে লেখা থাকে। আর শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য বাহারি মোড়কে নি¤œ মানের কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের শিশু খাদ্য ও বেকারি সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারা অবৈধ এসব বেকারি বন্ধ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। স্থানীয় ডাক্তাররা জানান, বিষাক্ত কেমিক্যাল ও নি¤œ মানের উপকরণ দিয়ে তৈরি করা এসব খাবারের কারণে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। এসব খাদ্য খেলে পেট ব্যথা, শরীর দুর্বলসহ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষের অকাল মৃত্যু হতে পারে। তারা এসব মানহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ বিষয়ে জানতে ঝাউডাঙ্গা বাজারের ‘সাতক্ষীরা ফুডস’ বেকারি মালিক শামিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেকারি পণ্য তৈরির সময় সব নিয়ম-নীতি মানা সম্ভব হয় না। অধিকাংশ বেকারিতেই একই অবস্থা দাবি করে তিনি বলেন, এসব বিষয় বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও জানেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version