ডেস্ক রিপোর্ট : শহরে অভিনব কায়দায় প্রতারণায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি চক্র। চক্রটি প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র। সোমবার সন্ধ্যায় শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকায় ওই চক্রের ফাঁদে পড়ে নিজের স্বর্ণের চেইন খুইয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের আফছার মোড়লের স্ত্রী তহমিনা খাতুন কাজল।
ওই চক্রের প্রতারণার শিকার তহমিনা খাতুন জানান, আমার এক আত্মীয় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে। সে কারণে আমি ও আমার চাচি সদর হাসপাতালে রোগী দেখতে যায়। বাড়ি ফেরার জন্য খুলনা রোড মোড় হতে একটি ইজিবাইকে উঠি। চালককে আলিপুর হাটখোলায় নামার কথা বলি। তখন অল্প বৃষ্টি হচ্ছিল, ইজিবাইক চালক আমাদের নিয়ে সংগ্রাম হাসপাতালের একটু আগে নির্জন স্থানে রেখে গাড়ির সামনের গøাসে থাকা পানি মুছতে গাড়ি থামায়। গাড়ি মোছার সময় চালক বলেন, আপা রাস্তায় আমি একটা জিনিস পেয়েছি কাগজে মুড়ানো আছে খুলে দেখেন তো। আমি কাগজটি খুলে দেখি স্বর্ণের কয়েনের মতো দেখতে একটা পয়সা সঙ্গে একটি মেমো আছে।
চালক গাড়ি চালাতে চালাতে বলেন, আপা মেমোটা পড়েন তো, আমি তখন মেমোটা পড়ি মেমোয় লেখা আছে, ‘শ্রী জুলেলার্স নিপন বাবু স্বর্ণকার আমার নমস্কার নেবেন আমি না যেতে পেরে আমার ভাতিজার কাছে দুই(২) ভরি থান সোনার পয়সা পাঠাইয়া দিলাম সুন্দর করিয়া দুই খানা চেইন মালা বানাইয়া দিবেন, ইতি আপনার বন্ধু জতিন বাবু সাহা, ২৬নং রবিন্দ্র রোড কলিকাতা ভারত’। পড়া শোনার পরে চালক বলেন, আপা আমার মনে হচ্ছে এইটা স্বর্ণের কয়েন এর অনেক মূল্য। বলতে বলতে সঙ্গীতা মোড় পার হওয়ার একটু পরেই নির্জন স্থানে গাড়ি থামায়। সেখানে রাস্তার পাশে অচেনা ৪জন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। তখন চালক ওই ৪ জন লোকদের জিনিসটা দেখান তারাও বলেন, এটা স্বর্ণের কয়েন কয়েক লক্ষ টাকা দাম হবে। ৪জন লোকের মধ্যে ১ জন লোক চালককে বলেন ভাই পয়সাটি যদি আমাকে দেন তাহলে আমি আপনাকে একখানা স্বর্ণের চেইন ও একজোড়া কানের দুল দেব। তখন লোকটা বাড়ি থেকে এসে দিচ্ছি বলে চলে যায়। তারপর বাকি ৩জন লোকের মধ্যে সকলেই বলেন প্রকৃত হকদার হলো আপা, আপা আপনি এটা নিন মূল্য অনেক টাকা ঐ লোকটাকে দেব কেন ?
আমি তাদের অভিনব কায়দার কথা বুঝতে না পেরে আমার নিজের গলায় থাকা ১ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও ৬আনা ওজনের একজোড়া কানের দুল চালককে দিয়ে স্বর্ণের কয়েনটি নিয়ে নেই। চালক আমার কানে কানে বলেন, আপা অনেক মূল্যের জিনিস বলা যায় না আপনি চুপি চুপি অন্য ইজিবাইকে চলে যান। তখন আমি অন্য গাড়িতে বাড়ি এসে আমার স্বামীকে বললে তখন জানাজানি হলে দেখা যায় স্বর্ণের কয়েনটি স্বর্ণ নয় তামা। তিনি আরো জানান, আমি যে ভুল করেছি অন্যরা যেন এই প্রতারক চক্রের ক্ষপ্পরে না পড়ে। ওই প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে প্রশাসনের কাছে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রতারণার শিকার ওই নারী।