ডেস্ক রিপোর্ট : কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও সরকারি অর্থ তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কালিগঞ্জ উপজেলার উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মৃত গোরাই সরদারের ছেলে মো. রুহুল কুদ্দুস সরদার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ২০১৬ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলার ৪নং দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন গোবিন্দকাটি গ্রামের মৃত দেব নারায়ন সরকারের ছেলে এক সময়কার তুখোড় জুয়া খেলোয়াড়, তক্ক সাপ ও সীমানা পিলার ব্যবসায়ী নামে পরিচিত ভারতীয় নাগরিক প্রশান্ত কুমার সরকার। তার নির্বাচন নিয়ে ভোটাররা অত্যন্ত বিরক্তবোধ করে। বিগত সময়ে আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকাকালে আ’লীগের যেসকল নেতা-কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছিল প্রশান্ত কুমার সরকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের আরো ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নির্যাতিতরা ও ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারি জ্বালাও পোড়াও সহিংসতাকারীদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্তরা তার পাশে যেতে পারে না। চেয়ারম্যান কথায় কথায় বলেন, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত না তাই তাদের কথা শুনতে হবে কেন? এ ধরনের মন্তব্য করে সে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। রুহুল কুদ্দুস সরদার অভিযোগ করে বলেন, সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, ভিজিডি ও রেশনকার্ড বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার সরকার। ইতিমধ্যে যেসব বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা-ভোগীর মৃত্যু হয়েছে তাদের নামেও টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের ২জন স্ত্রী ও ৬ মেয়ে। এদের মধ্যে ৫ মেয়ে স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করে। অপর মেয়েটি কালিগঞ্জের বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে চাকুরি করলেও তার ভারতে বাড়িঘর রয়েছে। চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকার নিজেও ভারতে জমি কিনে বাড়ি করেছেন। চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে এখানেও দু’টি পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন এবং জমি কিনে সেখানে আরো একটি বাড়ি নির্মাণ করছেন, যার ছাদ দেয়ার কাজ শেষ হয়েছে। তার কোন সহায় সম্পত্তি না থাকা স্বত্বেও এত বাড়িঘর ও সম্পদের মালিক কীভাবে হলেন সে প্রশ্ন সবার মনে। এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান প্রশান্ত তার গুন্ডা বাহিনী তার ওপর লেলিয়ে দেন। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নের বিভিন্ন সোলিং রাস্তার ইট তুলে নিয়েছেন। এছাড়া নবযাত্রা প্রকল্পে রাস্তার কাজ কর্ম-সৃজনের শ্রমিক দিয়ে করে ৫ লাখ, গৃহহীনদের ঘর দেয়ার নামে ৫ লাখ, সরকারি রাস্তার গাছ বিক্রি করে প্রায় ৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অসহায় দুস্থ দরিদ্র মানুষের বিভিন্ন ভাতা ভোগীদের টাকা আত্মসাৎ করায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। তার এসব দুর্নীতির সাথে অসৎ সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত থেকে উভয় আর্থিক সুবিধা ভোগ করছে। তিনি দুর্নীতিবাজ ইউপি চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার সরকারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সমূহ তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/