আগস্ট ৫, ২০২০
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডা. হজরত আলীর দাফন সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি: মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. হজরত আলী’র (৯০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১ টার দিকে উত্তর কালিগঞ্জ শহীদ সামাদ স্মৃতি ময়দানে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক রাসেল’র নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ার হুসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। পরবর্তীতে জোহরের নামাজের পর নিজ গ্রাম হাড়দ্দাহে জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। প্রসঙ্গত: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয়দফা ঘোষণা করার পর মাঠে নেমে পড়েন ডা. হজরত আলী। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে কিছু সময়ের জন্য বঙ্গবন্ধু কালিগঞ্জ আসেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয় ডা. হজরত আলীর। এসময় তিনি বঙ্গবন্ধুর সাহচর্যে মুগ্ধ হন। সাধারণ নির্বাচন ও পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃত্বের নানা কুটচাল ও সার্বিক পরিস্থিতির সম্পর্কে খবর রাখার চেষ্টা করতেন সর্বদা। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে স্থানীয় অনেক যুবক মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকেন। ডা. হজরত আলী তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং ট্রেনিং এর জন্য নাম তালিকাভুক্ত করেন। বঙ্গবন্ধুর আহŸানে তিনি গঠন করেন সংগ্রাম পরিষদ। ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন ডা. হজরত আলী। সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাস্টার জেহের আলী। ডা. হজরত আলীর নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ নাম তালিকাভুক্ত করা সকলকে ভারতে ট্রেনিং ক্যাম্পে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ ডা. হজরত আলী নিজে সীমান্ত নদী ইছামতি পার হয়ে শুন্যেরবাগান শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান শুরু করেন। তবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের কাছ থেকে কোন সম্মানী ভাতা নিতেন না তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি দেশে ফেরেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের অনুরোধের সত্তে¡ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেননি তিনি। তার মৃত্যুর পর কালিগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দের অনুরোধে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়। ডা. হজরত আলী ১৯৭২ সালে তিনি কিছুদিনের জন্য কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি আবারও মানুষের চিকিৎসা প্রদান শুরু করেন। ২০০৭ সালে বসতবাড়ির পাশে পিতা শের আলীর নামে একটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। ওই ক্লিনিকে চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। এর বাইরে সময় পেলে তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে অংশ নিতেন বলে জানা গেছে। 7,470,989 total views, 3,191 views today |
|
|
|