নিজস্ব প্রতিনিধি : দেবহাটার সখিপুরে এক গৃহবধূ ও তার দুই শিশু কন্যাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় ৪জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষে সোমবার (১০ আগস্ট) দেবহাটা থানায় একটি মামলা রেকর্ড করা হয়। যার নং-৫। রবিবার (৯ আগস্ট) রাতে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর শিকার গৃহবধূর স্বামী দক্ষিণ সখিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে দেবহাটা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন, দক্ষিণ সখিপুর গ্রামের মৃত. বাবুর আলী সরদারের ছেলে আজগার আলী (৩৫), তার স্ত্রী ফারহানা খাতুন (২২), আকবর আলীর স্ত্রী সালমা খাতুন (৪০), এবং ছেলে আবু সাঈদ (২০)। মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত বুধবার (৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহবধূ শামিমা ইয়াসমিন সাথীর বাড়িতে ঢুকে দুই শিশু সন্তানসহ তাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা। সে সময়ে আসামিরা গৃহবধূ সাথীর শ্লীলতাহানী ও তাকে হত্যার চেষ্টা এবং কাছে থাকা স্বর্ণালংকারও ছিনিয়ে নেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে গত কয়েকদিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আহতের স্বামী কবির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী মৃত বাবুর আলী সরদারের ছেলে আকবর আলীর পরিবারের সাথে তাদের বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি তাদের আরেক প্রতিবেশী নওশের আলী মারা গেলে মঙ্গলবার তাদের বাড়িতে মৃত্যু পরবর্তী অনুষ্ঠান ছিল। ৩০/৪০ জন আত্মীয় স্বজনের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় কবির হোসেনের বাড়িতে।
কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে বুধবার সকালে ডেকোরেটারের সামগ্রী ফেরত আনতে একটি ভ্যান ভুল করে কবির হোসেনের বাড়ির পরিবর্তে পূর্ব বিরোধ থাকা প্রতিবেশী আকবর আলীর বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এসময় আকবর আলী, তার স্ত্রী সালমা খাতুন, ছেলে আবু সাঈদ, আকবরের ভাই আজগার আলী ও তার স্ত্রী ফারহানা খাতুন ক্ষিপ্ত হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে নিয়ে কবির হোসেনের বাড়িতে ঢুকে শামিমা ইয়াসমিন সাথীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সে সময়ে কবির হোসেন বাড়িতে ছিলেন না। গালিগালাজের এক পর্যায়ে তারা কবির হোসেনের স্ত্রী শামিমা ইয়াসমিন সাথী ও তার দুই শিশুকন্য সাদিয়া খাতুন (৮) এবং মাহি (২) কে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে।
পাশাপাশি আহতবস্থায় গৃহবধূ শামিমা ইয়াসমিনের শ্লীলতাহানী, তাকে শ্বাস-রোধে হত্যার চেষ্টা এবং কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় আসামিরা। পরে স্থানীয় প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত অবস্থায় গৃহবধূকে শামিমা ইয়াসমিন সাথীকে উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার চিকিৎসা শেষ রবিবার রাতে শামিমা ইয়াসমিনের স্বামী কবির হোসেন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে ভিকটিম গৃহবধূ ও তার শিশু সন্তানদের প্রাণনাশের হুমকি যাচ্ছে বলেও কবির হোসেন তার অভিযোগে জানিয়েছেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, ‘দুই শিশু সন্তানসহ গৃহবধূকে মারপিট ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে’।