Site icon suprovatsatkhira.com

কলারোয়ায় পুলিশের উপর হামলাকারি সেই রেজাউল মেম্বার এবার ঘুষ না দেয়ায় ভিক্ষুক প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড আটকিয়ে রেখেছে

কলারোয়া প্রতিনিধি: কলারোয়ায় ঘুষ হিসাবে দাবি করা ৪ হাজার টাকা দিতে না পারায় প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড আটকে রেখেছে ইউপি মেম্বর। গত দুই দিন ধরে কার্ডের জন্য পাড়া মহল্লায় কান্নাকাটি করায় বিষয়টি জানা জানি হয়। ঘটনাটি কলারোয়া উপজেলার ১ নং জয়নগর ইউনিয়নে। ইউপি মেম্বারের নাম রেজাউল বিশ^াস ওরফে ধোপা রেজাউল। পুলিশের উপর হামলা মামলার চার্জশীটভ‚ক্ত আসামী ওই মেম্বার। এলাকায় সে ভয়ংকর সন্ত্রাসী হিসাবে পরিচিত।
জয়নগর ইউনিয়নের ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের মৃত মোবারক গাজীর প্রতিবন্ধীপুত্র আকছেদ আলীর স্ত্রী (৬০) ওরফে (আকছেদ পাগল) রওশনারা বেগম জানান, তাদের কোন পুত্র সন্তান নেই । তিনটি কন্যা সন্তান। স্বামী আকছেদ আলী জন্ম থেকে পাগল হওয়ায় (প্রতিবন্ধী) বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করে সংসার নির্বাহ করে আসছে। করোনার কারনে গ্রাম ঘুরলেও কেউ ভিক্ষা না দেওয়ায় সংসার চলে না। এ অবস্থায় ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রোজাউল বিশ^াস ওরফে ধোপা রেজাউলের কাছে প্রতিবন্ধী ভাতার কর্ড দেয়ার জন্য আবেদন করি। পরে তিনি আইডি কার্ডসহ ফটো নিয়ে একটি কার্ড করে দেন। গত সম্পাতে আমার স্বামীর কার্ড হয়েছে জানিয়ে রেজাউল মেম্বর ঘুষ বাবদ ৪ হাজার টাকা দাবি করে। আমরা ভিক্ষুক হওয়ায় অত টাকা কোথায় পাবো জানালে ভিক্ষা করে টাকা যোগাড় করে আনার কথা বলে প্রতিবন্ধী কার্ডটি আটকিয়ে রেখেছে। গত তিন মাসের ভিক্ষাকরা জামানো চাল বিক্রি করে দুই হাজার টাকা মেম্বারকে দিলেও তার মন গলেনি। রেজাউল মেম্বারের ঘুস চাওয়ার বিচার দাবি করে বিষয়টি রওশানা বেগম পাড়ার মানুষদের জানিয়েছে বলে জানায়।
ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম বলেন, আকছেদ প্রতিবন্ধী কিনা সেটি পরীক্ষার জন্য আমার কিছু টাকা খরচ হয়েছিল। আকছেদের বউয়ের কাছে আমার জেরের পাওনা ওই টাকা দাবি করেছিলাম। তারা সে টাকা এখনো দেয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে ইউপি মেম্বর বলেন, রাগ করে তারা কর্ডটি গ্রহণ করেনি।
ইউপি চেয়ারম্যান ছামছুদ্দিন আল মাসুদ বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রেজাউল মেম্বর ঘুস ছাড়া কোন কাজই করে না। এর আগেও সে ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের খলিল সানার নিকট থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে ৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেছিলো। এনিয়ে গত ১৬-০৭-২০১৯ কলারোয়া ইউএনওর দপ্তরে অভিযোগ হলে উপজেলা পর্যায়ের এক নেতার সুপারিশে তার কিছু হয়নি।
এলাকাবাসি জানায়, রেজাউল মেম্বর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার ভয়ে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
তার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক মামলা আছে। স্থানীয় সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ি সূত্র জানায়, রেজাউল মেম্বারের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হামালা করার অভিযোগ আছে। গত ২৯-০৫ ২০১৮ ইং তারিখে রেজাউল মেম্বার সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে সরসকাটি পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মাজরিহাকে হাতুড়ি পেটা করে আহত করে। এ ঘটনা তার বিরুদ্ধে একটি মামলা (নং-০৫) দায়ের হয়। রেজাউল মেম্বার পেনাল কোড ১৪৩/৩৪১/১৮৬/৩৩২/৩৫৩/১১৪ ধারার চার্জশীট ভ‚ক্ত আসামী। মামলাটি চলমান।
কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি জেরিন কান্তা বলেন, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version