Site icon suprovatsatkhira.com

আশাশুনিতে বাড়ি ঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর আহত ১০

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘরের চালে ঢিল ছোড়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট গোলযোগে দু’টি বাড়ি, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পোল্ট্রি ফার্মে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। আশাশুনি উপজেলার তেতুলিয়া পশ্চিমপাড়ার কোহিনুর বেগম ও তার মেয়ে রোজিনার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর ও লুটপাটে বাধা দেওয়ায় ওই পরিবারের ছয়জনসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন, তেতুলিয়া পশ্চিমপাড়ার গ্রাম পুলিশ রুহুল আমিনের মেয়ে কোহিনুর বেগম, তার মেয়ে রোজিনা, রোজিনার ছেলে ইমরান, রাহান, একই পাড়ার মরিয়ম, মোসলেমা, নাছিমা ও রানী, সামছুর রহমান ও রিঙ্কু। এদের মধ্যে কোহিনুরকে আশাঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও অন্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তেতুলিয়া পশ্চিমপাড়ার খোলপেটুয়া নদীর চরের বাসিন্দা কোহিনুর বেগম জানান, তেতুলিয়া ব্রীজের পাশের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম সরদারের ছেলে নজরুল ইসলাম (১৫) তেতুলিয়া হামিইউছুনুর কওমি মাদ্রাসা ও হাফিজাখানার নজরান বিভাগে পড়াশুনা করে।
কোহিনুর ইসলাম আরো জানান, মাদ্রাসার ঘাট থেকে নজরুলকে ডেকে এনে তার উপর অত্যাচার করা হয়েছে বলে মাদ্রাসার ছাত্ররা এলাকায় প্রচার দেয়। পরে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তারা বাড়ি সংলগ্ন মুদি দোকানের শার্টার, মেইন গেটের তালা, ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে। একে একে তারা চারটি বসত ঘর, একািট রান্না ঘর ও বাথরুমের দরজা ভেঙে ফেলে। দোতালার সিড়িঘরের দরজাও তারা ভেঙে ফেলে। বিভিন্ন জিনিসপত্র, ঘরের চাল, ছাদের অংশ বিশেষ ভাঙচুর করে। এ সময় হামলাকারিরা তাদের পোল্ট্রি ফার্মটিও ভাঙচুর করে। লুটপাট ও ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় তাকে (কাহিনুর) এলোপাতাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে রোজিনা, তার দু’ ছেলে, মরিয়মসহ ১০ জন জখম হয়।
একপর্যায়ে দেবহাটা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার ইয়াছিন আলী, আশাশুনি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীরের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারিরা চলে যায়।
এদিকে রবিউল ইসলামের ছেলে নজরুল ইসলাম বলে সে শুক্রবার ভোরে অজু করার জন্য মাদ্রাসার পুকুর ঘাটে যায়। বাড়ি থেকে ডাক দিয়ে ঘরের চালে ঢিল মারার অভিযোগে তাকে কোহিনুর নানী আটকে রেখে সারা গায়ে আলকাতরা মাখিয়ে দেয়। বিষয়টি সে ও তার পরিবারের সদস্যরা ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীকে জানান। একপর্যায়ে খবর ছড়িয়ে পড়লে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী জানান, কোহিনুর ও তার মেয়ে রোজিনার সামাজিক সম্মান নেই। রোজিনা দু’ স্বামীকে তালাক দিয়েছে। দ্বিতীয় স্বামী রমজান হাজীর কাছ থেকে চার লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এলাকার পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় অনেকেই তাদেও উপর ক্ষুব্ধ। নজরুলকে ডেকে নিয়ে আটক কওে আলকাতরা মাখানোর বিষয়টি তাকে জানানোর পর দফাদার আজিজুল ইসলামসহ দু’জনকে কোহিনুরের বাড়িতে পাঠানো হয়। সেখানে দফাদারকেও অপমান করা হয়।
তেতুলিয়া হামিইউছুনুর কওমি মাদ্রাসা ও হাফিজাখানা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোস্তফা হাজী বলেন, তিনি লোকমুখে বিষয়টি জেনেছেন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবীর বলেন, যেভাবে ভাঙচুর ও মারপিট করা হয়েছে তা বেআইনি। লিখিত অভিযোগ পেলেই মামলা নিয়ে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে। এলাকার শান্তিরক্ষায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version