সমীর রায়, নিজস্ব প্রতিনিধি : আশাশুনির শ্রীউলা-প্রতাপনগরের ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেছেন, ‘দেশের বন্যা পরিস্থিতি ও ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী নিজেই তদারকি করছেন। আপনাদের এ কষ্ট দীর্ঘস্থায়ী হবে না, এ প্রতিশ্রæতিতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেনাবাহিনীর টেঁকসই বাঁধ নির্মাণ করতে গেলে অনুকুল পরিবেশ প্রয়োজন। ততদিন ক্ষতিগ্রস্তদের কষ্ট লাঘবের জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ জন্যে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে’। শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালি গ্রামের ভেঙে যাওয়া বেড়ি-বাঁধ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বেড়ি-বাঁধে আশ্রিতদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে নেওয়া হবে। কোন মানুষ যাতে খাবার, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। অল্প কাঠে যাতে রান্না করতে পারেন সেজন্য বন্ধু-চুলা সরবরাহের বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। এছাড়া এ এলাকার অর্থনীতির প্রধান উৎস চিংড়ি শিল্পের ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্ষতি পূরণ ও আর্থিক প্রণোদনার বিষয়টি হাতে আরও বড় আকারে করার আবেদন জানানো হবে’।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আপনাদের কষ্ট লাঘবের জন্য বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলেছি। তারা ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে ডিজাইন করে দ্রæত কাজ শুরু করবে। মূল বাঁধ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকল সুবিধা অসুবিধা আমরা অতি গুরুত্বের সাথে দেখে যাব’। এদিকে বিকল্প বাঁধের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু সরকার বলেন, ‘স্থানীয় শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল ও প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেনের সাথে কথা বলে বিকল্প অস্থায়ী রিং বাঁধের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যার কাজ অচিরেই শুরু হবে।’
শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা রবিবার (৩০ আগস্ট) থেকে রিং বাঁধের কাজ শুরু করব। সাড়ে ৬ কি.মি. রিং বাঁধটি হবে হাজরাখালী এলজিইডি রাস্তার দক্ষিণ ধার দিয়ে মাড়িয়ালা মোড় ঘুরে কোলা-ঘোলা বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত। এতে শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালী, কলিমাখালী (আংশিক), মাড়িয়ালা (আংশিক) ও প্রতাপনগর ইউনিয়নের কোলা ও হিজলিয়ার একটি অংশ বাইরে থাকবে। এতে শ্রীউলার প্রায় ২০টি এবং আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের ওঠা-নামা বন্ধ হবে’।
এদিন বিভাগীয় কমিশনার ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক মানুষের হাতে ত্রাণের প্যাকেজ তুলে দেন এবং নদী পথে প্রতাপনগরের চাকলা, হরিশখালী ও কোলাঘোলা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা, কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস, আশাশুনি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, থানা অফিসার ইনচার্জ গোলাম কবীর, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন প্রমুখ।
অচিরেই বিকল্প রিং বাঁধ দিয়ে জনভোগান্তি কমানো হবে-আশাশুনিতে বিভাগীয় কমিশনার
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/