প্রেস বিজ্ঞপ্তি : শ্যামনগরের আটুলিয়ায় চিংড়ি ঘের জবরদখল চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শ্যামনগর উপজেলার মৃত সুধীর মাঝির ছেলে তপন কুমার মাঝি। তিনি বলেন, বিগত ০১/০১/২০১৯ হতে ৩১/১২/২০২৩ তারিখ পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া মৌজার জেএল নং-১০৭, সিট নং-১০-এর অধীনে মালিক পক্ষ গোপাল চন্দ্র মাঝি, প্রশান্ত কুমার মাঝি ও দীনবন্ধু মাঝির নিকট থেকে পাঁচ বছরের জন্য চিংড়ি ঘের করার জন্য চুক্তিবদ্ধ (ডিড) করে জমি লিজ গ্রহণ করেন।
কিন্তু ঘেরের মালিক পক্ষরা বর্তমানে দেশে না থাকায় মালিকপক্ষের শরিক একই উপজেলার বুড়িগোয়ালিনি গ্রামের মৃত অধর চন্দ্র মাঝির ছেলে প্রদীপ কান্তি মাঝি কয়েকবার তার লিজকৃত ঘের লুট করে এবং লুট করার সময় ঘরের লুটপাট ও ঘেরের বাসা ভাঙচুর করে এবং ২টি জাল নিয়ে সেখান থেকে নিয়ে যায়। বর্তমানে প্রদীপ কান্তি মাঝি ঘের মালিক তপন কুমার মাঝিকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি ও মামলা ও হামালার ভয় দেখাচ্ছে।
তপন কুমার মাঝি লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসী প্রদীপ কান্তি মাঝির নেতৃত্বে পিজুস মন্ডল, হাফিজুর রহমান, ছুন্নত শেখ ছাড়াও এলাকার আরও ৩০/৪০ জন লোকজন গত ২ আগস্ট ২০২০ তারিখ রাত ৯টার সময় তার লিজকৃত ঘেরের সব মাছ লুট করে নিয়ে যায় এবং জীবননাশের হুমকি দেয়। সংবাদ সম্মেলনে তপন কুমার মাঝি আরও বলেন, সন্ত্রাসী প্রদীপ কান্তি মাঝি মালিক পক্ষের শরিক হওয়ার ফলে অবৈধভাবে ওই সম্পত্তি জবরদখল করবে হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। এই বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডলের নিকট থেকে লিজদাতার শরিক প্রদীপ কান্তি মাঝি ও তপন কুমার মাঝির মধ্যে ¯øুইস গেট, ড্রেন, পানি বিক্রি এবং এজমালী মাছের ঘেরের শরিক অংশের টাকা ইত্যাদি সংক্রান্ত অভিযোগটি আপোশ মীমাংসার জন্য প্রেরিত হলে মীমাংসার স্বার্থে প্রদীপ কান্তি মাঝি ও তপন কুমার মাঝিকে নিয়ে দুইবার বসা-বসি হয় এবং আলোচনা ও পর্যালোচনার পর ৯নং বুড়িগোয়ালীনী ইউপি চেয়ারম্যান সরেজমিনে তদন্ত করেন। প্রদীপ কান্তি মাঝি তপন কুমার মাঝি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বুড়িয়োগালীনী ইউপি কার্যালয়ে শুনানি করেন। উভয়পক্ষ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে তা প্রতীয়মান হয়।
তিনি বলেন, বাদী ও বিবাদী ২৬/১১/২০১১ তারিখে হালনাগাদ আর্থিক আয়-ব্যয়ের নিষ্পত্তির বিবরণীতে দেখা যায় বাদী ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এজমালী ঘেরের হিসাব-নিকাশ ২৩,৫০৬/- টাকা বুঝে পেয়েছে বলে স্বীকার করেন। ¯øুইস গেটটি তৃতীয় পক্ষ হিসেবে মৃত শারদা চরণ মাঝির ছেলে দীনবন্ধু মাঝি, ও মৃত নগেন্দ্রনাথ মাঝির ছেলে গোপাল চন্দ্র মাঝির সম্পত্তিতে অবস্থিত। গেটটি তপন কুমার মাঝির ছেলে গোপাল চন্দ্র মাঝি ও দীনবন্ধু মাঝির আর্থিক সহযোগিতায় তৈরি বলে প্রতীয়মান হয় এবং বিবাদী প্রশান্ত কুমার মাঝির নামে গেটটি অনুমোদন হয়।
প্রশান্ত কুমার মাঝি গেটটি অদ্যাবধি সার্বিক পরিচালনা করে আসছে। পূর্ব থেকে ধান চাষ ও বিগত ১৯৯৫ সালের গেটটি তৈরি থেকে বিবাদী তাদের দখলীয় শরিক অংশের ১.০০ একর সম্পত্তি ছাড়া অন্য শরিকের আংশিক জমি (হারি দিয়ে) অদ্যাবধি চিংড়ি চাষ করে আসছে। প্রদীপ কান্তি মাঝির অভিযোগে উল্লেখিত গেট ও গেটের সামনের জমি দাবি ন্যায়সংগত নয় বলে প্রমাণ হয়। প্রদীপ কান্তি মাঝি ইতিপূর্বে একাধিক বার তপন কুমার মাঝিকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে তা প্রমাণিত হয় সে কারণে তপন কুমার মাঝিকে অহেতুক হয়রানি না করে উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত মেনে শান্তিপূর্ণভাবে স্ব-অবস্থানে থাকার জন্য বলা গেল।
তিনি বলেন, প্রদীপ কান্তি মাঝিরর বিরুদ্ধে এলাকার অসহায় মানুষের কাছ থেকে জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল করে অন্যত্র বিক্রয়সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় তার সন্ত্রাসী বাহিনীও রয়েছে। তিনি ওই বাহিনীর হাত থেকে আমার লিজকৃত ঘের রক্ষা করতে এবং নিরাপত্তার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।